আলিঙ্গনে পিটুনি অথচ এত বড় অসভ্যতায় নিশ্চুপ
দিন কয়েক আগেই কলকাতার সংবাদমাধ্যমগুলো সরব হয়েছিল এক যুগলকে মারধর করার খবর নিয়ে। তাদের অপরাধ ছিল চলন্ত ট্রেনে ভিড়ের মধ্যে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রথমে মেট্রোর কামরার কয়েকজন যাত্রী আপত্তি তোলেন। অভিযোগ রয়েছে, যুগলের উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এরপর রুখে দাঁড়ান পুরুষসঙ্গীটি। আর তাতেই শুরু হয় মারধর। মেয়েটি বাঁচাতে গিয়েছিল ছেলেটিকে, কিন্তু ক্ষীপ্ত জনতা থামেনি ৷ মার খেতে হয়েছে তাকেও।
এর রেশ কাটতে না কাটতে অশ্লীলতার চূড়ান্ত সীমা প্রত্যক্ষ করলেন সেই কলকাতারই দুই তরুণী।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার। এদিন চলন্ত বাসের মধ্যে প্রকাশ্যে হস্তমৈথুন শুরু করেন এক ব্যক্তি। আর এ ঘটনার প্রতিবাদে এগিয়ে আসেননি একজন ব্যক্তিও।
ওই দুই ছাত্রীরই একজন পুরো ঘটনার ভিডিও তুলে পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তাতেই জানাজানি হয় বিষয়টি।
ঘটনার বিবরণে আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে- প্রাইভেট টিউশন নিয়ে দমদমের বাড়িতে ফিরছিলেন উত্তর কলকাতার একটি কলেজে পড়া বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। বাসে এক বান্ধবীর সঙ্গে সামনের দিকের আসনেই বসেছিলেন তিনি। হঠাৎ এক ছাত্রীর নজরে পড়ে, পিছনের আসনে বসে থাকা এক প্রৌঢ় সহযাত্রী অদ্ভুত ভঙ্গিতে তাদের দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করছে।
এরপর ওই ছাত্রী চিৎকার করার পর বাসের কোনো যাত্রী ঘটনার কোনো প্রতিবাদ না করলে ছাত্রী ঘটনার ভিডিও করতে শুরু করেন।
যাত্রীটি নেমে যাওয়ার পরে বাসের কন্ডাক্টরকে ওই ছাত্রী বিষয়টা চিৎকার করে জানান। কিন্তু, কন্ডাক্টরের জবাব শুনে আরও চমকে যান তিনি। তার কথায়, ‘কেউ কোনও প্রতিবাদ না করায় আমরা কন্ডাক্টরকে চিৎকার করে বলি। তিনি হেসে বলেন, ‘কী করব বলুন! কার মনে কী আছে, কী করে বুঝব!’
‘আমি চিৎকার করি, ওঁকে ধরুন। উনি আমাদের সঙ্গে অভদ্রতা করছেন। কিন্তু, কেউ আটকালো না। তার পর লোকটি নিজের আসন ছেড়ে উঠে যায়। বাস তখনও চলছে। শ্যামবাজার মোড়ের আগেই বাসটি একটু স্লো হতেই তিনি নেমে যান।’
ওই ছাত্রীর তোলা ভিডিও সমেত পোস্টটি এক জন নেটিজেন কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন। পরে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ওই ব্যক্তির নাম অসিত রাই। বাড়ি হুগলির বৈদ্যবাটিতে। খবরটি কলকাতা পুলিশ তাদের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করেছে।
ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে সুস্থ কি না সে বিষয়ে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।
এনএফ/এমএস