৬০০ গরু হাওয়া?
ভারতের গুজরাটে একসঙ্গে ৬০০ গরুর সন্ধান না পাওয়ায় রহস্য তৈরি হয়েছে। গুজরাটের একটি খোয়াড়ে গরুগুলো রাখা হয়েছিল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাস্তা থেকে উদ্ধার করে জুনাগাড় পৌরসভা গরুগুলোকে ওই খোয়াড়ে পাঠিয়েছিল। জুনাগাড় থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তোরানিয়া গ্রামে খোয়াড়টি অবস্থিত। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
তবে আশ্রয়কেন্দ্রের মালিক ও ম্যানেজার দাবি করেছেন, গরুগুলো গত এক বছরে মারা গেছে এবং এদের বেশিরভাগই প্লাস্টিক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।
ডেপুটি মিউনিসিপ্যাল কমিশনার এম কে নন্দানী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, এটা সত্য যে, যে গরুগুলো আমরা খোয়াড়ে পাঠিয়েছিলাম সেগুলো হারিয়ে গেছে। গত বছর, আমরা ৭৮৯টির মতো গরু জব্দ করেছিলাম এবং সেগুলো খোয়াড়ে পাঠিয়েছিলাম। আমরা খোয়াড়ের মালিকের কাছে একটি নোটিশ পাঠিয়েছি। নোটিশে জানতে চেয়েছি, তাদের কাছে মোট কত গরু পাঠানো হয়েছিল এবং সেগুলো কীভাবে ও কখন মারা গেছে তার একটি রেজিস্টার কপি দিতে। এতে যদি কোনো জালিয়াতি ধরা পড়ে তাহলে অভিযোগ দায়ের করব।
খোযাড়ে পাঠানো গরুগুলোকে এককালীন রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন খরচ হিসাবে ৩ হাজার রুপি প্রদান করে থাকে।
হেমাল গুজারাটি নামে সরকারি এক পশু চিকিৎসক জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো গরুর মৃত্যুর ব্যাপারে আমরা কোনো তথ্য-প্রমাণ পাইনি। সাধারণত, মহামারিতে পশুদের একটি বড় অংশ মারা যায়, কিন্তু এখানে এমন কোনো মহামারি নেই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খোয়াড়ের মালিক ধিরু সাভল্য জানান, আমি একটি গরুও বিক্রি করিনি। গত ৬-৭ মাসে অন্তত সাড়ে চারশো গরু প্লাস্টিক খেয়ে মারা গেছে। গরুগুলো আগে থেকেই অসুস্থ ছিল এবং গ্রামবাসী সাক্ষী আছে যে, প্রতিদিনই একটি অথবা দুটি গরু মারা যেত। পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে আমি মৌখিকভাবে এ বিষয়ে জানিয়েছি। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।
তবে একসঙ্গে ৬০০ গরু উধাও হওয়ার বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতিক ও পশু কর্মীদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। জুনাগাড় মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেছেন, ‘অবশ্যই অন্যায় কিছু হয়েছে।’
রাজ্যের পশু কল্যাণ বোর্ড সদস্যরা এ ঘটনাকে বড় ধরনের কেলেঙ্কারি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মেয়র অধ্যশক্তি মজুমদার জানান, কর্পোরেশন এ বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে এবং আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই এফআইআর (এজাহার) দায়ের করব।
পশু কল্যাণে বোর্ডের সদস্য রাজেন্দ্র শাহ বলেন, এটা গোটা রাজ্যের কেলেঙ্কারি। রাস্তায় গণহত্যা থেকে বাঁচাতে কর্পোরেশন থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি গরু আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। পৌরসভার প্রত্যেক নাগরিকের উচিৎ গরু বিষয়ে সঠিক হিসাব-নিবাশ রাখা। কিন্তু এটা করা হয়নি।'
এসআর/এনএফ/এমএস