দিয়াজ-ক্যানেলই রাউলের উত্তরসূরি
রাউল কাস্ত্রোর ঘনিষ্ট বা ডান হাত হিসেবে পরিচিত মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেলকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে কিউবার পার্লামেন্ট। প্রেসিডেন্ট হিসেবে একমাত্র প্রার্থী ছিলেন দিয়াজ ক্যানেল। তার মানে দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যে তিনি সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করবে কিউবার পার্লামেন্ট। খবর বিবিসি।
কয়েক যুগ পর এখন কমিউনিস্ট শাসিত কিউবায় কাস্ত্রো পরিবারের বাইরে নতুন নেতৃত্ব আসছে। কাস্ত্রো পরিবারের বাইরের নেতৃত্বের কিউবা কিভাবে এগিয়ে যাবে তা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। ৮৬ বছর বয়সী রাউল কাস্ত্রো অবসরে যাচ্ছেন। তিনি ২০০৬ সালে তার ভাই ফিদেল কাস্ত্রোর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।
রাউল কাস্ত্রো প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিউবার সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি দেশের ভেতরেও বেশ কিছু সংস্কার কর্যক্রম শুরু করেছিলেন। তার জায়গায় কিউবার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল মনোনীত হয়েছেন।
কিউবায় বিপ্লবের সময়ের প্রজন্ম এখন তার হাতে নেতৃত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইছেন। বৃহস্পতিবার কিউবার পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফল এবং নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করবে। রাউল কাস্ত্রো প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়লেও কিউবার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিতে তার প্রভাব আগের মতই বহাল থাকবে। ২০২১ সালে পরবর্তী কংগ্রেসের আগ পর্যন্ত রাউল কাস্ত্রোই কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল ২০১৩ সালে কিউবার ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার আগ পর্যন্ত তিনি ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে থাকলেও নিজেকে সেভাবে প্রকাশ করেননি। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোর খুব কাছাকাছি যেতে সক্ষম হন। ৫৭ বছর বয়স্ক মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল উদারপন্থী হিসেবেও পরিচিত।
তার জন্ম ১৯৬০ সালে। এর মাত্র এক বছর আগেই কিউবায় ফিদেল কাস্ত্রো প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে সপথ গ্রহণ করেন। কিউবার নতুন নেতা মিগুয়েল দিয়াজ ইলেকট্রিক্যাল ইনজিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করেছেন। বিশ বছর বয়সে সান্তা ক্লারাতে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির যুব সংগঠনের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন তিনি।
ক্যারিবীয় দেশটি নতুন নেতৃত্বে একদলীয় শাসন থেকে বেরিয়ে আসবে এমন স্বপ্ন দেখছেন বিশ্লেষকরা। ফিদেল কাস্ত্রো এখন অতীত আর রাউল কাস্ত্রোও অবসরে গেলেন। এই পরিবারের বাইরে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে অনেকের শঙ্কা রয়েছে। তবে নতুন নেতৃত্বের উপর রাউল কাস্ত্রোর প্রভাব যে থাকবে তা অনেকটাই নিশ্চিত। নতুন নেতৃত্বকে প্রথমে দেশটির অর্থনীতি এবং তরুণ প্রজন্মের দিকেই বেশি নজর দিতে হবে। এর আগেই অবশ্য দিয়াজ ক্যানেলের দৃঢ় মতাদর্শের প্রশংসা করেছেন রাউল কাস্ত্রো।
টিটিএন/আরআইপি