সাদ্দাম হুসাইনের মরদেহ নেই কবরে?
ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দাম হুসাইনকে তার নিজের গ্রাম অাল-আওজাহ’তে দাফন করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তার সেই কবরস্থান বিমান হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইট-পাথরে ঘেরা কবরস্থান মাটিতে মিশে ফেলা হয়েছে। সাদ্দাম হুসাইনের শেষ চিহ্নটুকু এখন আর চেনার উপায় নেই।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শক্ত হাতে যে মানুষটি দেশ শাসন করেছেন; সেই সাদ্দাম হুসাইনকে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। ইরাকে দশকের পর দশক ধরে যার নাম শুনলেই মানুষ ভীত ছিল; আজ তার শেষ চিহ্নটুকু ঘিরে দানা বাঁধছে রহস্য এবং সন্দেহ।
অাল-আওজাহ গ্রামে কি তাকে আদৌ তাকে দাফন করা হয়েছিল; কবরে কি তার মরদেহ রাখা হয়েছিল? যদি সত্যিই তাকে দাফন করা হয়ে থাকে তাহলে তার মরদেহ কোথায়?
ইরাকের আলবু নাসের উপজাতি গোষ্ঠীর নেতা শেখ মানাফ আলী আল-নিদা। সাদ্দাম হুসাইনও এই উপজাতি গোষ্ঠীর। সাদ্দাম হুসাইনের পরিবারের পক্ষে মরদেহ সেই সময় গ্রহণ করে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন নিদা। কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই সেইদিন ইরাকের এই প্রেসিডেন্টের মরদেহ তাৎক্ষণিক দাফন করা হয়।
সূর্য ওঠার আগেই ভোর রাতে সাদ্দাম হুসাইনকে দাফন করা হয় অাল-আওজাহ গ্রামের কবরস্থানে। হাশেদ আল-শাবি জোটের আধা-সামরিক বাহিনী সাদ্দাম হুসাইনের কবরস্থানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত। এই বাহিনী বলছে, কবরস্থানের ওপর জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সদস্যরা স্নাইপার রেখেছিল। পরে ইরাকি বিমান বাহিনীর হামলায় কবরস্থান ধ্বংস হয়ে যায়।
বিমান হামলার ঘটনা নিজ চোখে দেখেননি শেখ নিদা। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, সাদ্দাম হুসাইনের কবরস্থান বোমায় উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
আধা-সামরিক বাহিনী হাশেদ আল-শাবির নিরাপত্তা প্রধান জাফর আল-ঘারাওয়ি জোর দিয়ে বলেন, ‘সাদ্দামের মরদেহ এখনো সেখানে রয়েছে।’
তবে হাশেদ আল শাবি জোটের এক যোদ্ধা গুঞ্জন ছড়িয়েছেন যে, সাদ্দাম হুসাইনের নির্বাসিত মেয়ে হালা ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশে ফিরে তার বাবার মরদেহ জর্ডানে নিয়ে গেছেন।
অসম্ভব!
সাদ্দাম হুসাইনের শাসনামলের এক শিক্ষার্থী, বর্তমানে দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি। মরদেহ তুলে জর্ডানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে এই অধ্যাপক বলেন, ‘এটি অসম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘হালা কখনই ইরাকে ফিরে আসেননি। মরদেহ সম্ভবত গোপন কোনো স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে...তবে কেউ জানে না কারা এ কাজ করেছে অথবা কোথায় নেয়া হয়েছে।’
যদি তাই হয়, তাহেলে সাদ্দামের পরিবারের সদস্যরা সেই গোপনস্থানের ওপর নিবিড় নজরদারি করবে।
তবে বাগদাদের অন্যান্য বাসিন্দাদের মতো আবু সামেরের বিশ্বাস, ইরাকের এই লৌহমানব এখনো বেঁচে আছেন।
তিনি বলেন, ‘সাদ্দাম মারা যায়নি। যাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে সে সাদ্দামের মতো দেখতে অন্য কেউ।’
সূত্র : এএফপি।
এসআইএস/এমএস