সিরিয়ার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার জবাবে দেশটিতে সামরিক অভিযান চালানো হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত শিগগিরই নেয়া হবে। সিরিয়ার দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, এই বিষয়ে ফরাসী ও বৃটিশ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ভবিষ্যতে আরো রাসায়নিক হামলা যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে একমত প্রকাশ করেছেন।
তবে বৃটিশ পরিবহন মন্ত্রী জো জনসন জানিয়েছেন, এখনই সামরিক অভিযান পরিচালনা করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিরিয়ার প্রধান সামরিক মিত্র রাশিয়া পশ্চিমাদের এই ধরনের কার্যক্রমের কঠোর সমালোচনা করেছে।
জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন তিনি রাশিয়া ও যুক্তরোষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা নাকচ করে দিতে পারছেন না। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন এ মুহুর্তে প্রধান কাজ যুদ্ধের সম্ভাবনা প্রতিহত করা।
ব্রিটিশ সরকারও বৃহস্পতিবার মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে ভবিষ্যতে যেন আবারো রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার না হয় সে লক্ষ্যে সিরিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করা জরুরি।
বৃহস্পতিবার ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়ে ম্যাক্রোঁ বলেন, দৌমায় সিরীয় সরকার যে রাসায়নিক হামলা চালাচ্ছে তার প্রমাণ তাদের কাছে আছে।
দৌমায় হামলার ঘটনার পর রোববার ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সিরিয়া সরকারের মিত্র হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর বিদ্রোহী অধ্যূষিত দৌমায় নৃশংসতার দায় বর্তায়। বুধবার তিনি এক টুইটে বলেন, মিসাইল আসছে, আরও অত্যাধুনিক, সুন্দর এবং শক্তিশালী।
বৃহস্পতিবার এক টুইটে তিনি বলেন শীঘ্রই আক্রমণ চালানো হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। পরে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা সিরিয়া বিষয়ে আজ একটি বৈঠক করছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেব।
মানবাধিকার কর্মী আর চিকিৎসা সেবাদানকারীরা জানিয়েছেন, সরকারি বাহিনীর রাসায়নিক হামলায় দৌমায় শনিবার অনেকে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। রাসায়নিক হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিরীয় প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার।
রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা (ওপিসিডব্লিউ) জানিয়েছে, রাসায়নিক হামলার প্রমাণ সংগ্রহ করতে দৌমায় প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে তারা। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া নমুনা থেকে ক্লোরিন ও নার্ভ এজেন্ট ব্যবহারের সত্যতা যাচাই করা গেছে।
রাসায়নিক হামলার অভিযোগ পশ্চিমাদের ‘প্ররোচনামূলক আচরণ’ বলে দাবী করেছে রাশিয়া। দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন বলেছেন, সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর ওপর মিসাইল হামলা করা হলে তা প্রতিহত করা হবে এবং পাল্টা আক্রমণও করা হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার আশা প্রকাশ করেন যে শিগগিরই এই অস্থির অবস্থার উন্নতি হবে।
টিটিএন/এমএস