সিরিয়া-রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাট্টা যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি-ফ্রান্স
সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলের দৌমায় রাসায়নিক হামলার জেরে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সিরিয়া ইস্যুতে একই সুরে কথা বলছে, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র। দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ এনে যেকোনো মুহূর্তে সিরীয় ভূখণ্ডে নতুন ধরনের স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে রাশিয়াকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যেকোনো মুহূর্তে সিরিয়ায় হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর এতে সমর্থন রয়েছে ওই তিন দেশের।
এদিকে থেমে নেই রাশিয়াও। মস্কো বলছে, মিত্র বাশার আল আসাদের সমর্থনে যেকোনো ধরনের গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবেলায় পিছপা হবে না তারা।
দৌমায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগে বিশ্বশক্তিগুলোর মাঝে চরম উত্তেজনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার মাঝে চলমান এই উত্তেজনায় যোগ দিয়েছে ফ্রান্স। বৃহস্পতিবার ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, তার কাছে প্রমাণ আছে যে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছেন।
ফরাসী এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের উপযুক্ত সময় অনুযায়ীই এর জবাব দেয়া হবে।
সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র আসছে; রাশিয়ার অন্যতম মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে এমন হুমকি দেয়ার একদিন পর বৃহস্পতিবার সকালে আবারো টুইট করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এতে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই বলি নাই, সিরিয়ায় ঠিক কখন হামলা চালানো হবে। তবে তা খুব শিগগিরই হতে পারে আবার শিগগিরই নাও হতে পারে।’
সিরিয়া শাসকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে সমর্থনের ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল বলেছেন, ‘তার দেশ আগে থেকেই দাবি করে আসছে যে, সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার নির্মূল করেনি এবং এটাই সত্যি।’
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা পদক্ষেপবিরোধীরা বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। হোয়াইট হাউস বলছে, গত শনিবার দৌমায় রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়া শাসক ও তার মিত্র রাশিয়াকে দায়ী করেছেন ট্রাম্প। উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা বলছেন, ওই হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে।
ট্রাম্পের টুইটের জবাবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ‘স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিকে ছুঁড়ে মারা উচিত, বৈধ (সিরিয়ার) সরকারের দিকে নয়; যে সরকার গত কয়েকবছর ধরে সিরীয় ভূখণ্ডে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে।’
তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে সিরিয়া সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে তার দেশ এবং তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের মিত্র। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলের ঘৌটার দৌমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ মিথ্যা। এছাড়া সিরিয়ার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপের প্রেক্ষাপট হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা যেতে পারে না।
বুধবার রাশিয়া সমর্থিত জোটের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যারা মানুষকে মারছে এবং এটি উপভোগ করছে; তাদের মতো গ্যাস প্রয়োগকারী জানোয়ারদের অংশীদার হওয়া উচিত হবে না।
এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপের আশঙ্কা নাকচ করে দেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। হোয়াইট হাউস বলছে, সম্ভাব্য সব উপায় এখন টেবিলে।
সূত্র : এএফপি।
এসআইএস/পিআর