লাখো মানুষের বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। গত মাসে ফ্লোরিডার একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে ১৭ জনের প্রাণহানির পর শনিবার ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
‘আমাদের জীবনের জন্য পদযাত্রা’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ থেকে দেশটির অস্ত্র আইন নিয়ন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বৃহত্তম এ পদযাত্রায় অংশ নেয়া লাখ লাখ মানুষের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে সহিংসতাবিরোধী স্লোগান। ওয়াশিংটনের পেনসিলভানিয়া এভিনিউয়ে সবচেয়ে বড় জনসমাগম ঘটে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার মার্জোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে বন্দুক হামলায় বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের দুঃসহ স্মৃতির কথা তুলে ধরেন উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের কাছে।
সেদিনের ভয়াবহ বন্দুক হামলায় বেঁচে গেছেন এমা গোনজালেজ নামের এক কিশোরী। পেনসিলভানিয়া এভিনিউয়ের সমাবেশে তিনি শুরুতেই বন্দুক হামলায় নিহত ১৭ জনের নাম পাঠ করেন। পরে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নীরবতা পালন করা হয়।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে যখন তার সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা তুলে ধরেন; তখন তার গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। পরে বন্দুক হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড নীরবতা পালন করা হয়। বন্দুক নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইনের দাবি উঠে এ সমাবেশে।
সমাবেশে মার্জোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে হামলায় বেঁচে যাওয়া ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ক্যামেরন কাস্কি বলেন, ‘রাজনীতিকরা : জনগণের প্রতিনিধিত্ব করুন অথবা বিদায় নিন। আপনাদের পাশে থাকুন অথবা সচেতন হোন, ভোটাররা আসছে।’
আরেক শিক্ষার্থী ড্যাভিড হগ বলেন, ‘এটা একটা নতুন দিন।’
তারুণ্যের এই বিক্ষোভ সমাবেশ দেশটির আটলান্টা, বাল্টিমোর, বোস্টন, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলস, মিয়ামি, নিউইয়র্ক স্যান ডিয়াগোসহ অন্যান্য শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৮ শতাধিক স্থানে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন মার্কিন নাগরিকরা। বিক্ষোভের সমন্বয়করা বলছেন, সিডনি, স্টকহোম, মৌরিশাস ও লন্ডনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল দে ব্ল্যাসিও বলেছেন, নিউইয়র্কের সমাবেশে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের দেয়া এক টুইটে তিনি বলেন,‘এই শিক্ষার্থীরাই আমেরিকা পরিবর্তন করবে।’
সূত্র : রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান।
এসআইএস/পিআর