পেটের ভেতর ১৯ কেজির টিউমার
নিশ্বাস নিতে পারতেন না। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে কপালে ঘাম জমত। সবসময়ই মনে হতো পেটের ভেতর কিছু একটা আছে। আচমকা তার ওজন বেড়ে যাওয়ায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল পাড়া প্রতিবেশীরাও। আলির পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ওজন যন্ত্রে ওজন নিতে গিয়ে দেখা যায় শরীরে ওজন অনেক বেশি দেখাচ্ছে।
কিন্তু সে এমন কোনো খাবারও খেত না যে হঠাৎ করেই এমন ওজন বেড়ে যাবে। এর পরেই পরীক্ষা করে দেখা যায় পেটের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বিশাল এক টিউমার। কলকাতার বসিরহাট এলাকার শের আলি সাপুই (৫০) নামের ওই ব্যক্তি পেট থেকে বিশাল ওজনের ওই টিউমার বের করার পর এখন তিনি সুস্থ আছেন।
চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলে লাইপোসারকোমা। মূলত চর্বিযুক্ত টিস্যু নিয়েই তৈরি হয় এই টিউমার। প্রকাণ্ড এই মাংসপিণ্ড পাকস্থলীর সিংহভাগ অংশ জুড়ে ছিল। অস্ত্রোপচার করতে শহরের একাধিক হাসপাতালে ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু বেশ কয়েকটি হাসপাতাল তাকে ফিরিয়ে দেয়।
রোগীর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, প্রকাণ্ড এই টিউমারের অস্ত্রোপচার করতে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। রোগীকে দীর্ঘক্ষণ অজ্ঞান করে রাখতে হয় এমন অস্ত্রপচারে। অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসকদের আশঙ্কা ছিল এত বড় অস্ত্রোপচারের ধকল সইতে পারবে না আলির শরীর।
দীর্ঘদিন ধরেই ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করে এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন আলি। অবশেষে সল্টলেকের বেসরকারি এক হাসপাতালে সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় আলির শরীরে অস্ত্রোপচার করেন ড. জে কে শাহ। টানা দেড় ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে পাকস্থলী থেকে যে মাংসপিণ্ডটি বেরিয়েছে তার ওজন ১৯ কেজিরও বেশি।
খাদ্যনালি থেকে তলপেট পর্যন্ত পেঁচিয়ে ছিল টিউমারটি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীরে কোনও অংশ বাদ না দিয়েই টিউমারটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আপাতত সুস্থ আছেন আলি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি জানিয়েছেন, ভাবিনি আবার সুস্থ হয়ে উঠব। ডাক্তারদের কৃতিত্বে এখন ভাল আছি।
টিটিএন/এমএস