মানবাধিকার পদক হারালেন সু চি
মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চিকে দেয়া সম্মানসূচক মানবাধিকার পদক প্রত্যাহার করে নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম।
বুধবার হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এক ঘোষণায় বলছে, ২০১২ সালে সু চিকে দেয়া ‘এলি ওয়াইসেল’ পদক বাতিল করা হবে।
মিউজিয়ামের কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা না জানানোয় সু চিকে দেয়া সম্মাননা প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে।’
সু চিকে মিয়ানমারের ম্যান্ডেলা হিসেবে মনে করা হয়; যিনি সেনা শাসন বিরোধিতা করায় দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলেন। তার ওই লড়াইয়ের জন্য শিগগিরই গণতান্ত্রিক নেত্রী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত পান। পরে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল জয় করেন মিয়ানমারের এ নেত্রী।
২০১৫ সালে সু চি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দেশটির জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস জয় লাভ করে। নির্বাচনের পর দেশটির স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।
কিন্তু সু চির সব খ্যাতি নিমিষেই হাওয়ায় মিশতে থাকে ক্ষমতায় আসার পর। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানে গণহত্যা, গণধর্ষণ ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের অভিযোগ ওঠে। এ অভিযান ঘিরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন সু চি।
এদিকে, হলোকাস্ট মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ সু চিকে দেয়া সম্মাননা ফিরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মিয়ানমার। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মিয়ানমার দূতাবাস বলছে, পদক প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটিকে ভুল বোঝানো হয়েছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর প্রায় সাত লাখ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়েছে। তারা সেখানে সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের হাতে ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগের মতো ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন।
সূত্র : এপি, সিএনএন।
এসআইএস/পিআর