‘জিন্নাহ দেশভাগ চাননি, নেহরুর কারণেই বাংলাদেশ-পাকিস্তানের জন্ম’
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভারতকে বিভক্ত এবং মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠন করতে চাননি বলে মন্তব্য করেছেন জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ভারত বিভক্ত না হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তানেরও জন্ম হতো না। তার এই মন্তব্য ভারতে নতুন করে রাজনৈতিক ঐতিহাসিক বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
দেশভাগের জন্য জওহারলাল নেহরু, মাওলানা আজাদ ও সরদার প্যাটেলসহ তৎকালীন স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও শীর্ষ রাজনীতিকদের দায়ী করেছেন কাশ্মিরের সাবেক এ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, তারা দেশের মুসলিম এবং শিখদের সংখ্যালঘু হিসেবে কখনোই মেনে নিতে পারেননি।
শনিবার কাশ্মিরে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফারুক আব্দুল্লাহ এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জিন্নাহ কখনোই দেশ ভাগের পক্ষে ছিলেন না। ফারুক আব্দুল্লাহ বলেন, জিন্নাহ দেশকে বিভক্ত করতে চাননি। ভারত যে বিভক্ত হবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল এবং একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব উঠেছিল।
ওই কমিশন সেই সময় জানায়, ‘আমরা মুসলিমদের জন্য বিশেষ প্রতিনিধিত্ব রাখবো। আমরা সংখ্যালঘু এবং শিখদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কিন্তু দেশ বিভক্ত করবো না।’
কাশ্মিরের এই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘ভারতীয় রাজনীতিকরা মুসলমান এবং শিখদের জন্য একটি সংখ্যালঘু কমিশন চায়নি। পরবর্তীতে জিন্নাহ পাকিস্তানের দাবি তোলেন।’
তিনি বলেন, ‘জিন্নাহ রাজি হলেও জওহরলাল নেহরু, মাওলানা আজাদ ও সরদার প্যাটেল দ্বিমত পোষণ করেন। যখন এটি ঘটলো না তখন জিন্নাহ পাকিস্তানের দাবি তুললেন। নাহলে কোনো বিভক্তির ঘটনাই ঘটতো না। তাহলে বাংলাদেশ, পাকিস্তানের জন্ম হতো না। এক ভারত থাকতো।’
ভারতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) বলছে, ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রেসিডেন্ট ফারুক আব্দুল্লাহ যে এই প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের প্রতি দরদ দেখাচ্ছেন; ঘটনাটি তেমন নয়। গত বছরের নভেম্বরে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মির পাকিস্তানের অংশ। পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে কয়টি যুদ্ধ হলো তাতে এর পরিবর্তন হবে না।’
কাশ্মিরের এই মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, তিন পারমাণবিক ক্ষমতাধর ভারত, চীন এবং পাকিস্তান এই উপত্যকার পাশে অবস্থান করায় স্বাধীন কাশ্মিরের আলোচনা নিরর্থক।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে প্রত্যেক দিনের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। গত বছর উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক বার সীমান্তে যুদ্ধবিরতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে উভয় দেশ।
সূত্র : প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া।
এসআইএস/এমএস