ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

বিশ্বে মানসিক রোগীর সংখ্যা ৭৪ কোটি

প্রকাশিত: ০৬:৫৮ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৫

উন্নত বিশ্বসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানসিক রোগ একটি অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা হলেও এ রোগে আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ন্যূনতম সংখ্যক মনোরোগ স্বাস্থ্যকর্মী নেই। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে বিশ্বের প্রায় ৭৪ কোটি মানুষ বিভিন্ন ধরণের মানসিক স্বাস্থ্যজনিত রোগে ভুগছেন।

মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রকাশিত ‘মানসিক স্বাস্থ্য মানচিত্র-২০১৪’ নামক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।  
 
প্রতিবেদনে উন্নত বিশ্ব ও নিম্ন আয়ের দেশের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া না পাওয়ার বৈষম্যমূলক চিত্র ফুটে উঠেছে।

প্রদিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দেশে প্রতি এক লাখ মানসিক রোগীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য একজন করেও স্বাস্থ্য কর্মী নেই। যেখানে উন্নত বিশ্বে প্রতি দুই হাজার মানসিক রোগীর চিকিৎসা দেয়ার জন্য একজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রাপ্ত তথ্যানুসারে বিশ্ব জনসংখ্যার প্রতি ১০ জনের একজন মানসিক স্বাস্থ্যজনিত রোগে ভুগছেন। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্যখাতে মোট জনবল রয়েছে তাদের শতকরা মাত্র এক ভাগ মানসিক রোগের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত।

ওয়াল্ড পপুলেশন ক্লকের তথ্যানুসারে বর্তমানে বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ৭৩২ কোটি ৮৩ লাখ ৬০ হাজার ৮০২জন। সেই হিসেবে প্রায় ৭৪ কোটি মানুষ বিভিন্ন ধরণের মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়কৃত টাকার পরিমাণ এখনো খুবই কম। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে যেখানে মাথাপিছু প্রতি বছর ৫০ ডলারের বেশি ব্যয় হয় সেখানে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মাথাপিছু প্রতি বছর দুই ডলারের কম টাকা ব্যয় হচ্ছে।

ব্যয়কৃত অর্থের বেশিরভাগই হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় হয় ফলে অর্থাভাবে মানসিক রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পান না। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রতি এক লাখ রোগীর জন্য হাসপাতালে মাত্র ৪২টি বেড বরাদ্দ রয়েছে এবং ১৪২ জন রোগী ভর্তির সুযোগ পান। উন্নত বিশ্বে এ সংখ্যা অনেক বেশি।

প্রাথমিকভাবে মানসিক রোগ চিহ্নিত করার জন্য তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। ২০১১ সালের মানসিক স্বাস্থ্য মানচিত্রের তুলনায় বিশ্বে বর্তমানে মানসিক রোগীর চিকিৎসায় কর্মরত নার্সদের সংখ্যা শতকরা ৩৫ ভাগ বৃদ্ধি পেলেও নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে অন্যান্য ডিসিপ্লিনের স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি রয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্য মানচিত্রে দেখা গেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নীতি, পরিকল্পনা, আইন প্রণয়ন করছে। বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ দেশ নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং তাদের অর্ধেকের বেশি দেশ এ সম্পর্কিত আইন প্রণয়নের কাজে হাত দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতি অনুসরণ করা হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল মেয়াদি সম্প্রসারিত মানসিক স্বাস্থ্য কর্মসূচি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে নেতৃত্ব ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, তৃণমূল পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যা প্রতিরোধে কৌশলপত্র প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং প্রমাণভিত্তিক তথ্য উপাত্ত ও  গবেষণা কার্যক্রমকে শক্তিশালী করাসহ প্রধানত চারটি উদ্দেশ্য এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যক্রম চলছে।

এমইউ/এসকেডি/এআরএস/এমএস