ফিলিস্তিনকে মার্কিন সহায়তা বন্ধের হুমকি ট্রাম্পের
ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় আগ্রহী না হওয়ায় ফিলিস্তিনকে দেয়া মার্কিন সহায়তা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার তিনি একাধিক টুইটে ওই হুমকি দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের প্রত্যেক বছর যুক্তরাষ্ট্র লাখ লাখ ডলায় সহায়তা দেয় এবং বিনিময়ে কোনো কৃতজ্ঞতা কিংবা শ্রদ্ধা পায় না। এমনকি তারা ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঝুলে থাকা শান্তি চুক্তির ব্যাপারেও আলোচনা করতে চায় না... শান্তি চুক্তির আলোচনার ব্যাপারে ফিলিস্তিনিরা আগ্রহী নয়, কেন আমরা তাদেরকে এই বিশাল অর্থ সহায়তা দেব?’
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট আসলে বলেছেন, তিনি আর অতিরিক্ত কোনো সহায়তা দিতে চান না। ফিলিস্তিনিরা আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি না হওয়া পর্যন্ত সহায়তা বন্ধ করে দেবেন।’
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সহায়তাকারী দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তম দাতা যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এই সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৭০ মিলিয়ন ডলার।
জেরজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ফলে ব্যাপক বিভাজিত ইস্যুটি ‘আলোচনার টেবিলের বাইরে’ রেখে শান্তি আলোচনা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।
গত ডিসেম্বরে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি ও তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ওই ঘোষণার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গাজা উপত্যকায়।
ফিলিস্তিন বলছে, যুক্তরাষ্ট্র যে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হতে পারে না তা ট্রাম্পের ঘোষণায় পরিষ্কার হয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য কোনো ধরনের মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা মেনে নেবেন না তিনি।
ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘেও ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জেরুজালেম ঘোষণার বিপক্ষে সংস্থাটির ১২৮টি সদস্য রাষ্ট্র ভোট দেয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবনায় জেরুজালেম ইস্যুতে ট্রাম্পের নেয়া সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানানো হয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি বলেন, প্রস্তাবনায় আমরা যা দেখেছি তা সংকট সমাধানের জন্য সহায়ক নয়।
তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের এখন যা বিশ্বকে দেখাতে হবে যে তারা আলোচনার টেবিলে আসতে চায়। এখন পর্যন্ত তারা আলোচনার টেবিলে আসেনি, কিন্তু সহায়তা চেয়েছে। আমরা সহায়তা দেব না। আমরা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি যে, তারা আলোচনার টেবিলে আসবে এবং আমরা শান্তি প্রক্রিয়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চাই।’
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি।
এসআইএস/আইআই
