জিসিসি সম্মেলনে কাতার সংকট সমাধান সম্ভব?
গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন মঙ্গলবার শুরু হবে। কুয়েতে অনুষ্ঠিতব্য ওই সম্মেলন দুই দিন ব্যাপী চলবে। গত সপ্তাহে জিসিসিভূক্ত ছয় দেশকে সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। খবর আল জাজিরা।
সোমবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রাহমান আল থানি জানিয়েছেন, কুয়েতে অনুষ্ঠিতব্য দুই দিনের গুরুত্বপূর্ণ ওই সম্মেলনে যাওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন কাতারের আমির। তিনি ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন।
তবে জিসিসিভূক্ত বাকি দেশগুলো অর্থাৎ বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ নেতারা ওই বৈঠকে অংশ নেবেন কিনা বা সবাই অংশ নিলেও কাতার সংকটের ক্ষেত্রে ইতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
গত জুনের পাঁচ তারিখ থেকে কাতারের ওপর সৌদি আরব, বাহরাইন, আরব আমিরাত এবং মিসরের অবরোধের পর থেকে কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল আহমেদ আল সাবাহ সংকট সমাধানে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এবারও জিসিসি সম্মেলনে সব দেশকে একত্র করার চেষ্টা করছে কুয়েত। কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা কতটুকু সফল হবে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।
আরব বিশ্বের চার দেশের সঙ্গে কাতারের চলমান অস্থিরতার কারণে এই সম্মেলনে সবার উপস্থিতি বিশেষ করে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করা দেশগুলো এক সঙ্গে সম্মেলনে বসবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মন্ত্রী পরিষদে অংশ নেব এবং আমির জিসিসি সম্মেলনে যোগ দেবেন। তিনি বলেন, জিসিসির কর্মকাণ্ড এখনও চালু রয়েছে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরব দেশগুলোর রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জোট জিসিসির এই সম্মেলন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কাতারের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর চলমান অস্থিরতার কারণে সম্মেলনে সবার উপস্থিতি এবং কাতার সংকট সমাধানের প্রচেষ্টার বিষয়গুলোকে বেশ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদে সহায়তা এবং অর্থ সহায়তা প্রদানের অভিযোগ এনে কাতারের ওপর প্রায় ছয় মাস ধরে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে সৌদি আরব, বাহরাইন, আরব আমিরাত এবং মিসর। তবে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দোহা। জিসিসির ৩৮তম ওই সম্মেলনে কাতার সংকট সমাধানে দেশগুলো কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
১৯৮১ সালে আর্থ-সামাজিক, নিরাপত্তা এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতার লক্ষ্যে জিসিসি যাত্রা শুরু করে। প্রতি বছরই জিসিসি সম্মেলনে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করতে একত্রিত হয় বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং আরব আমিরাত।
অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও গুরুত্বপূর্ণ ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। জিসিসির মহাসচিব আবদুল লতিফ বিন রাশিদ আল জায়ানি কুয়েতে পৌঁছেছেন। তিনি কুয়েতে পৌঁছেই দেশটির আমির শেখ সাবাহ আল আহমেদ আল সাবাহর সঙ্গে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছেন।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েেছে, ছয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি প্রাথমিক সভায় অংশ নিতে সোমবার কুয়েতে একত্রিত হবার কথা। এ বছরের সম্মেলনের আলোচ্য বিষয়গুলো এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তবে আলোচনায় কাতার সংকটকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজ জয়েরি বলেছেন, এই সংকটের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। এর প্রভাব অবরোধ আরোপ করা দেশগুলোর ওপরও পড়ছে। এর ফলে কোনো কিছুই অর্জিত হচ্ছে না। এই সম্মেলনে একটি সমাধান পাওয়া যাবে বলেন আশা প্রকাশ করেছেন জয়েরি।
টিটিএন/এমএস