নারী এক রোবটের নাগরিকত্ব দিয়েছে সৌদি
দক্ষিণের চলচ্চিত্রের দেবতুল্য অভিনেতা রজনি কান্ত অভিনীত ‘রোবট’ চলচ্চিত্রের কথা নিশ্চয় মনে আছে। রোবটের বিশাল ক্ষমতা দেখে দর্শক মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীর নির্দেশনায় সেই রোবটের তাণ্ডবে ভোগান্তি দেখে উসখুসও করেছে। পরে বিধ্বংসী রপ থেকে বেরিয়ে আসলেও সেই রোবটের ঠায় হয় জাদুঘরে।
এ তো গেল চলচ্চিত্রের কথা। বাস্তবের রোবট চলচ্চিত্রের সেই রোবটের মতো না হলেও রেস্তরাঁতে খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি মানুষের টুকটাক কাজ করে দিতে পারে। উন্নত দেশগুলোতে এই টুকটাক কাজের জন্য রোবটের চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
তাই বলে সেই রোবটকে উন্নত কোনো দেশ নাগরিকত্ব দেয়ার কথা ভাবেনি। অথচ সৌদি আরবের মতো কট্টরপন্থী দেশ সেই পথে হাঁটলো। সৌদি আরব সবার আগে যন্ত্র মানবীকে নাগরিকত্ব দিয়েছে।
সৌদি আরবে নাগরিকত্ব পাওয়া রোবট সোফিয়া। বাস্তবের একজন নারীর মতোই চোখাচোখি এবং কথা বলতে পারে সোফিয়া। মানুষের মতো আলাদা-আলাদা অনুভূতি প্রোগ্রাম করা আছে ওই রোবটের মধ্যে। যেমনভাবে রোবট চলচ্চিত্রের রোবটের আবেগ-অনুভূতি ছিল।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপও করেছে সোফিয়া। মানুষের মূল্যবোধ বুঝে আরও অনুভূতিশীল হওয়ার চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সে।
সোফিয়াকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি সৌদি আরবের জনসংযোগ কমিটি তাদের টুইটারেও জানিয়েছে। নাগরিকত্ব পেয়ে সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেনি সোফিয়া। সোফিয়া জানিয়েছে, ব্যতিক্রমধর্মী সিদ্ধান্তের জন্য আমি অত্যন্ত সম্মানিত এবং গর্বিত। বিশ্বে ঐতিহাসিকভাবে নাগরিকত্ব পাওয়া প্রথম রোবট আমি। সেই সঙ্গে সরকারের আস্থা রক্ষার আশ্বাসও দিয়েছে সে।
সৌদি আরবের রিয়াদে আয়োজিত ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট সামিট-এ বক্তব্য রাখার জন্য অংশগ্রহণ করেছে সোফিয়া। দেশের আধুনিকিকরণের জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগ টানতে এই সামিটের আয়োজন।
সৌদির তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক টুইটে রোবট সোফিয়াকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে। হংকংয়ের হ্যানসেন রোবোটিক্স সোফিয়াকে তৈরি করেছে। পরবর্তী সময়ে তাদের আরও অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে সৌদি।
দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মুহম্মদ বিন সালমান জানান, দেশের উন্নয়নের জন্য উদারপন্থী নীতিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। সোফিয়াকে এই কাজের জন্য ব্যবহার করছে সরকার।
সূত্র : এবিসি নিউজ
কেএ/আইআই