পুলিশকে বিভ্রান্ত করছেন হানিপ্রীত
ভারতের পঞ্চকুলা জুড়ে কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। গত ২৫ অাগস্ট ধর্ষক ধর্মগুরু রাম রহিমের রায়ের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি এড়াতে তৎপর ছিল পুলিশ-প্রশাসনও।
মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর আদালতে তোলা হয় ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান গুরুমিত রাম রহিম সিংহের পালিতা কন্যা হানিপ্রীত ইনসানকে। আর আদালতের রায়ে ছয়দিন পুলিশ হেফাজতে থাকতে হবে তাকে।
টানা ৩৮ দিন লুকোচুরি খেলার পর চণ্ডীগড় থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে জিরাকপুর-পাটিয়ালা হাইওয়ে থেকে পাপা কি পরি হানিপ্রীত ও তার এক নারী সঙ্গীকে গ্রেফতার করে হরিয়ানা পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার টয়োটা ইনোভা গাড়িটিও।
পরে তাকে পঞ্চকুলা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। গ্রেফতারের পর চণ্ডীমন্দির থানায় হানিপ্রীতকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) এবং নারী পুলিশ কর্মকর্তারা। পুলিশ সূত্রের দাবি, এতদিন হানিপ্রীত কোথায় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন এবং ডেরা-অনুগামীদের তাণ্ডবে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে।
কিন্তু জেরায় তার সঠিক জবাব দেননি হানিপ্রীত। বরং সেই প্রশ্নগুলিকে এড়িয়ে গিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তিনি। সাড়ে চার ঘণ্টার এই জেরা-পর্ব চলাকালীনই হানিপ্রীত বুকে ব্যথার কথা জানালে তাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তার মেডিকেল রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি।
এর পর হানিপ্রীতকে বুধবার পঞ্চকুলার একটি আদালতে তোলা হয়। আদালত চত্বরে জোরদার নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছিল। শুনানির সময় সরকারি আইনজীবীরা জানান, হানিপ্রীত গুরমিতের সব থেকে ঘনিষ্ঠ। তাই ডেরায় যা হতো, সেই সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন তিনি।
২৫ অাগস্ট পঞ্চকুলা, সিরসাসহ হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল, তাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল হানিপ্রীতের। তাই আইনজীবীরা তার ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু হানিপ্রীতের কৌঁসুলিরা এর বিরোধিতা করেন। আদালত হানিপ্রীতের ছয়দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
তবে হানিপ্রীত এতদিন কোথায় ছিলেন, তার সদুত্তর মেলেনি। এক সূত্রের দাবি, ডেরা প্রধানের নির্দেশেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন হানিপ্রীত। লুধিয়ানা থেকে বানুরে পালিয়ে একটি রিসোর্টে উঠেছিলেন। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে আত্মসমর্পণ করার পরিকল্পনা করেছিলেন হানিপ্রীত।
এ দিকে, যে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের দায়ে ২০ বছরের কারাবাসের সাজা পেয়েছেন গুরমিত, তারা আজ ডেরা প্রধানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আর্জি জানিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
টিটিএন/আরআইপি