মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রি করবে ভারত?
বর্তমানে সারা বিশ্বে অন্যতম আলোচিত ইস্যু হলো রোহিঙ্গা। সম্প্রতি মিয়ানমারে কয়েকটি পুলিশ চেকপোস্টে হামলার ঘটনায় দেশটিতে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে সেনাবাহিনী। ওই ঘটনার পর থেকেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘শুদ্ধি অভিযান’র নামে রাখাইন রাজ্যে নিরীহ মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িঘরে আগুন দেয়ার মতো ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা চার লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হচ্ছে। ইতোমধ্যে মিয়ানমারে রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংকট নিরসনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে দ্রুত শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প।
এছাড়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা এবং রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় দেশটির ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জেইদ রাদ আল হুসেইন। রোহিঙ্গাদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য।
তবে চলমান রোহিঙ্গা সংকটের মধ্যেই মিয়ানমার সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে চাইছে ভারত। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমনটাই তুলে ধরা হয়েছে। মিয়ানমারের নৌপ্রধানের নয়াদিল্লি সফরে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ সংবাদ প্রকাশ করে।
গত বুধবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং দেশটির সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মিয়ানমার নৌবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ অ্যাডমিরাল তিন অং সান। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আলোচনার সিদ্ধান্ত দৃশ্যত এই অঞ্চলে চীনের প্রভাবের বিপরীতে নিজেদের দাঁড়ানোর চেষ্টার অংশ।
রয়টার্স জানায়, এসব বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সাগরে টহল নৌকা সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমারের নৌবাহিনী প্রধান মুম্বাইয়ে ভারতের নৌজাহাজ নির্মাণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
এমন একটি সময়ে মিয়ানমারের কাছে ভারত অস্ত্র বিক্রি করতে চাইছে যখন রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের জন্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনা চলছে।
বিএ