রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে দ. আফ্রিকা
রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ পাঠিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মানবিক সংস্থা।
আল ইমদাদ ফাউণ্ডেশনের মুখপাত্র হামযা বদরুদ্দিন বার্তা সংস্থা আনাদলুকে জানান, তারা তিনদিনে তিন হাজার জনকে খাবারের প্যাকেট, তিন হাজার জনকে কম্বল, এক লাখ ৫০ হাজার ট্যাবলেট এবং দেড়শটি তাঁবু দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ‘আমরা চারশটি কূপ খননের পরিকল্পনা করছি এবং পানি পরিশোধনের জন্য ৫০ হাজার পিস ট্যাবলেট দেয়ার কথা ভাবছি।’
কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করেছে এই ফাউণ্ডেশন। কিন্তু ফাউণ্ডেশনের সদস্যরা সোমবার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাজ্য থেকে ত্রাণ আসার কথা জানান তিনি। তবে কী পরিমাণ ত্রাণ আসছে সে ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ করেননি তিনি।
জোহানেসবার্গ ভিত্তিক সালামিডিয়া রেডিও স্টেশনের পার্টনার আজহার ভাদি আনাদলু নিউজ অ্যাজেন্সিকে জানান, তার সংগঠন রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ডলার সংগ্রহ করেছে।
তিনি আরও জানান, আল ইমদাদ ফাউণ্ডেশনের কাছে আমাদের অর্থ হস্তান্তর করব। এটা আমাদের প্রথম সংগ্রহ। আরও অর্থ আসতে পারে। রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রে চরম দুর্দশার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, মানুষজন ক্ষুধার্ত হয়ে দিন পার করছে। তাদের জন্য সামান্য এমনকি কারও কাছে সাহায্য একেবারেই পৌঁছায়নি। সেখানে স্যানিটেশন সুবিধা না থাকার কথাও জানান তিনি।
গত সপ্তাহে শত শত মানুষ মিয়ানমার সরকারের প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কিছু তল্লাশি চৌকিতে হামলার অযুহাতে তাণ্ডব শুরু করে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জীবন বাঁচাতে এখন পর্যন্ত চার লাখ ১২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তাদের সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন রাষ্ট্র, সংগঠন, এনজিও এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বেসরকারি উদ্যোগে বস্ত্র বিতরণের সময় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ির ঘটনায় রোহিঙ্গা এক নারী ও দু'জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রামের বালুখালি পান বাজার এলাকায় বেসরকারি একটি সাহায্য সংস্থার পক্ষ থেকে বস্ত্র বিতরণের সময় হুড়োহুড়িতে মানুষের পায়ের নিচে পড়ে রোহিঙ্গা এক নারী ও দুই শিশুর এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও কলা বিতরণের পৃথক এক ঘটনায় মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে সাহায্য প্রদানকারী একটি সংস্থা জানিয়েছে।
ত্রাণ নিয়ে আসা কোনো গাড়ী কিংবা কাউকে ত্রাণ দিতে দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে পালিয়ে আসার সময় বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এক কাপড়ে চলে এসেছে। ফলে কাউকে কাপড় বিতরণ করতে দেখলেই সেখান থেকে এক টুকরো কাপড় পাওয়ার আশায় হুড়োহুড়ি করছে বেশিরভাগ মানুষ।
অনেক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশে প্রবেশের পর থেকে হুড়োহুড়ি করে ত্রাণ নিতে না পেরে মানবেতর জীবন পার করছেন। বৃষ্টির কারণে তাদের জীবন যাপন আরও দুঃসহ হয়ে পড়ছে।
সূত্র : আল জাজিরা, এএডটকম
কেএ/আরআইপি