আশুরায় বিসর্জন নিয়ে রাজ্যের মুখোমুখি মমতা
মহরম মাসে আশুরার দিন (১০ মহরম) একাদশীতে দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জন কেন বন্ধ থাকবে? বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারতের বিজেপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, আশুরার দিন বিসর্জন হবে না। সব ধর্মের মানুষের কথা ভেবে, সব দিকে শান্তি বজায় রাখতেই এ সিদ্ধান্ত। বিসর্জন ও মহরম নির্বিঘ্নে হোক।
চলতি বছর দশমী পড়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। তার পরের দিন ১ অক্টোবর রোববার আশুরা। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত ছিল, দশমীর দিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদিন বিসর্জন বন্ধ থাকবে। তবে ২ থেকে ৪ অক্টোবর প্রতিমা নিরঞ্জন করা যাবে। পরে অবশ্য দশমীর দিন বিসর্জনের সময়সীমা বাড়িয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত করার কথা বলা হয়।
বিসর্জনে কোনো রকম নিয়ন্ত্রণের বিরোধী বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন, বিভাজনের উদ্দেশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী এসব করছেন। হিন্দুদের বলেছি, পরম্পরা মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেবেন। নেতা-মন্ত্রীর কথা শুনবেন না। আর সমস্যা থাকলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সেনা আনিয়ে নেন। সেনা পাহারায় বিসর্জন হোক।
এদিকে রাজ্যের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে। গত শুক্রবার মামলার শুনানিতে আবেদনকারী স্মরজিৎ চক্রবর্তী জানান, পঞ্জিকা মতে দশমীতে নিরঞ্জন করা যাবে রাত ১টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত। কোনো ধর্মীয় মিছিলের জন্য অন্য একটি ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে।
রাজ্য পুলিশের ডিজিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক রকম জটিলতা হচ্ছে। বিজেপি অপপ্রচার চালাচ্ছে। সবার কাছে আবেদন, কুৎসায় কান দেবেন না, প্ররোচনা বা চক্রান্তে পা দেবেন না।’
মমতার অভিযোগ, ‘বিসর্জনকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি করছে বিজেপি। বজরঙ্গ, আরএসএস বা বিজেপি মার্কা কয়েকটা লোক যদি মনে করেন আমাদের শান্তি, সংস্কৃতিতে আঘাত হানবেন, তাদের বলে দিচ্ছি আগুন নিয়ে খেলবেন না। বাংলার মানুষ এসব মেনে নেবে না। এখানে কোনো গেম প্ল্যান বা ব্রেন প্ল্যান কাজে লাগবে না।’
সূত্র : আনন্দবাজার
আরএস/এমএস