বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশ ৪ লাখ ছাড়িয়েছে : জাতিসংঘ
জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে সহিংসতার ঘটনায় চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়েছে। রোহিঙ্গাদের এই সঙ্কট মোকাবেলায় বিশ্ববাসীর সহায়তা চাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগের পর জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাংলাদেশমুখী ঢল শুরু হয়েছে। শনিবার জাতিসংঘ বলছে, সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪ লাখ ৯ হাজারে পৌঁছেছে; দিনে গড়ে প্রায় ১৮ হাজার জন বাংলাদেশে ঢুকেছেন।
কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এই এলাকার শরণার্থী শিবিরে আগে থেকেই তিন লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। নতুন রোহিঙ্গা স্রোতে শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রচুর চাপ তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, শুক্রবার শরণার্থী শিবিরের কাছে ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণের কাপড় বিতরণের সময় পদদলিত হয়ে দুই শিশু ও এক নারী নিহত হয়েছেন।
আর্ন্তজাতিক সহায়তা ও মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে শনিবার ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে তিনি রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কথা বলবেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র নজরুল ইসলাম বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সহিংসতা শিগগিরই অবসান ও সেখানে জাতিসংঘের একটি তদন্ত দল পাঠাতে মহাসচিবকে আহ্বান জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।
‘তিনি সকল রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তাদের মাতৃভূমিতে পুনর্বাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাবেন’- বলেন নজরুল ইসলাম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান জাতিগত নিধনের অবসান ঘটাতে আমরা মিয়ানমার সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখবো।’
মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ড্রোন বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনের দায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তৃতীয়বারের মতো ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলছে, ‘বার বার এ ধরনের উসকানিমূলক কাজের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা। একই সঙ্গে এ ধরনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন যাতে আর না ঘটে তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার অাহ্বান জানানো হয়েছে। এ ধরনের উসকানিমূলক কাজ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি ডেকে আনতে পারে।’
তবে অভিযোগের ব্যাপারে মিয়ানমারের সরকারের মুখপাত্র জ্য তে বলেছেন, বাংলাদেশের অভিযোগের ব্যাপারে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে এর আগে বাংলাদেশের এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার।
জ্য তে বলেন, বাংলাদেশ যে তথ্য দিয়েছে তা যাচাই করে দেখবে মিয়ানমার। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশ শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলা করছে। ভালো বোঝাপড়ার মাধ্যমে আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স।
এসআইএস/জেআইএম