সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় মার্কিন কর্মকর্তাকে ঢুকতে দেবে না মিয়ানমার
একজন মার্কিন কর্মকর্তা রাখাইন রাজ্যের সহিংসতাপূর্ণ এলাকা পরিদর্শনে যেতে চাইলে মিয়ানমার তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে। শুক্রবার রাখাইনের রাজ্যসচিব টিন মং সুই এ কথা জানান।
আগামী সপ্তাহে মিয়ানমার সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যাট্রিক মার্ফির।
টিন মং সুই জানান, আমাদের দেশের নেতাদের সঙ্গে রাজধানী নেপিদো’তে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন প্যাট্রিক মার্ফি। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া অং সান সু চি’র ভাষণও তিনি প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাবেন। ওই ভাষণে রাখাইনের সঙ্কট নিয়ে কথা বলবেন সু চি। তবে মার্ফিকে সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় যেতে দেয়া হবে না।
রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটওয়ে-তেও যাওয়ার সুযোগ পাবেন মার্কিন এই কর্মকর্তা। রাখাইনের গভর্নর ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেখানেই কথা বলবেন তিনি।
বুধবার মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জাও হাতে জানান, রাখাইনের একশ ৭৬টি রোহিঙ্গা গ্রাম জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে। যা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মোট গ্রামের ৪০ শতাংশ।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা চার লাখের বেশি রোহিঙ্গার মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে দুই লাখের বেশি শিশু। এসব শিশুদের জরুরি স্বাস্থ্য সহায়তা দরকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
জাতিসংঘের হিসাবে ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই শিশু। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসা এসব শিশুরা অনাহারে, অর্ধাহারে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সেখানে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়াকে জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করেছে। সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমার সরকার এবং অং সান সু চিকে চাপ দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মহল। তারপরও সহিংসতা সমানহারে চলছে।
এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান জেইদ রাদ আল হুসেইন রাখাইন প্রদেশের সহিংসতার ঘটনাকে পাঠ্যপুস্তকে পঠিত জাতিগত নিধনের উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
সূত্র : রয়টার্স
কেএ/আইআই