রাখাইন সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘কৌশলী উদ্বেগ’
মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা ও রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় ‘কৌশলী নিন্দা ও উদ্বেগ’ জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। রাখাইনে সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানে ৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ঘটনায় হোয়াইট হাউস বলছে, ‘উভয় পক্ষের সহিংসতার ঘটনায় হোয়াইট হাউস উদ্বিগ্ন।’ এই উভয়পক্ষের একপক্ষ হিসেবে বার্মা সেনাবাহিনীর নাম উল্লেখ করলেও হোয়াইট হাউস ‘রোহিঙ্গা’দের নাম উল্লেখ করেনি।
বার্মা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা ও পরবর্তীতে ভয়াবহ জাতিগত সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ হাকাবে স্যান্ডারস বলেন, ‘বার্মায় চলমান সঙ্কটে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
স্যান্ডারস বলেন, ‘২৫ আগস্ট বার্মা নিরাপত্তাবাহিনীর পোস্টে হামলার জেরে কমপক্ষে তিন লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। আমরা এই হামলা এবং ক্রমবর্ধমান সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছি। তবে রাখাইনে সহিংসতার ঘটনায় নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীকে দায়ী কিংবা নাম উল্লেখ করেননি হোয়াইট হাউসের এই কর্মকর্তা।
রাখাইনের সাম্প্রতিক এই হামলার জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে (এআরএসএ) দায়ী করছে মিয়ানমার। এআরএসএ’র ওই হামলার পর বার্মা নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে এক হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; এদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা।
২৫ আগস্ট মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে মিয়ানমার পুলিশের ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলার চেষ্টা করে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। এতে ১২ নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ৯৬ জন নিহত হয়।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, ওই হামলার পর থেকে নিষ্ঠুর অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, রাখাইন ছাড়া করতে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে অভিযান চলছে। অভিযানে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
বৌদ্ধ অধ্যুষিত রাখাইনে সংখ্যালঘু রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছেন। কয়েক শতাব্দি ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসছে তারা।
রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন অভিযান পরিচালনা করছে বলে জাতিসংঘ সতর্ক করে দিলেও যুক্তরাষ্ট্র নীরব থেকেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর মাঝেই হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে রাখাইনের সহিংসতা নিয়ে নিন্দা জানানো হয়। হোয়াইট হাউস রাখাইন সহিংসতায় নিন্দা জানালেও নিপীড়নের শিকার ‘রোহিঙ্গা’দের নাম উল্লেখ করা থেকে বিরত থেকেছে।
সূত্র : এএফপি, রয়টার্স।
এসআইএস/আইআই