বাংলাদেশসহ তিন দেশে বন্যায় প্রাণ গেল ২৪৫ জনের
বন্যা ও ভূমিধসে বাংলাদেশসহ ভারতের উত্তরাঞ্চল ও নেপালের দক্ষিণাঞ্চলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৫ জনের দাড়িয়েছে। গত কয়েকদিনের ভয়াবহ এ বন্যায় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন আরো অন্তত কয়েক মিলিয়ন মানুষ। তিন দেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নেপালে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ত্রাণ সরবরাহের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। টানা বর্ষণে দেশটির শত শত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় নেপালে অন্তত ১১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
নেপালে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে সহায়তা করছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ আকার ধারণ করেছে। এই অঞ্চলে প্রচুর খাদ্য সংকট দেখা যাওয়ায় হেলিকপ্টার থেকে খাবার ও পানীয় প্যাকেট নিচে ফেলছেন দেশটির বিমানবাহিনীর সদস্যরা।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাম কৃষ্ণ সুবেদি বলেন, বন্যায় হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকার যত দ্রুত সম্ভব ত্রাণ সরবরাহের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
নেপাল সীমান্তের ভারতের বিহার রাজ্যের অন্তত ১৩টি জেলায় বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় ৪১ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই পানিতে ডুবে, ধসে পড়া বাড়ি-ঘরের নিচে অথবা উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়ে।
বিহারের আড়াই শতাধিকেরও বেশি স্কুল ও সরকারি ভবনে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এতে প্রায় ২ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। হেলিকপ্টার এবং নৌকাযোগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার প্যাকেট ও পানির বোতল বিতরণ করছেন।
রোববার ভারতের উত্তরাঞ্চলের হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে দুটি বাস চাপা পড়ে অন্তত ৪৬ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আসাম প্রদেশে বন্যায় ২১ জন নিহত হয়েছে। বিভিন্ন ভবনের ছাদ ও বাড়িতে আটকা লোকজনকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কতা কেন্দ্র বলছে, দেশের প্রধান ১৮টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসাইন চৌধুরী মায়া বলেছেন, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় গত দুই দিনে অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। পানিবন্দি হয়েছে আরো ৬ লাখ মানুষ। সরকারের তৈরি অস্থায়ী ৯৭০টি আশ্রয়কেন্দ্রে আরো ৩ লাখ ৬৮ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।
এসআইএস/পিআর