ইন্দোনেশিয়ায় হিজবুত তাহরির নিষিদ্ধ
ইসলামি সংগঠন হিজবুত তাহরির নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। সংগঠনটি বিশ্বব্যাপী খিলাফত কায়েম করতে চায়। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনা সত্ত্বেও দেশটির সরকার বুধবার সংগঠনটি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়।
ইন্দোনেশিয়ার বিচার ও মানবাধিকার মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ফ্রেড্ডি হারিস বলেন, জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার জন্য হিজবুত তাহরিরের আইনগত অধিকার প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জোকো এ সংক্রান্ত আদেশে স্বাক্ষর করেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ওই আদেশ বাস্তবায়ন করা হলে তা হবে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার। তবে মূলধারার ইসলামি দলগুলো প্রেসিডেন্টের আদেশ অনুমোদনের ব্যাপারে সমর্থন জানিয়ে অাসছিল।
ফ্রেড্ডি হারিস বলেন, হিজবুত তাহরির নামের সংগঠনটিকে এক রকম নীতিমালার কথা বলে অনুমোদন নেয়া হলেও তাদের কার্যক্রম ওই নীতিমালা ইন্দোনেশিয়া রাষ্ট্রের পরিপন্থী।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া অন্যতম। ইসলামি মধ্যপন্থা নীতি অনুসরণের কারণে আগে থেকেই দেশটির সুনাম রয়েছে।
ইতোমধ্যেই বেশ কিছু দেশে হিজবুত তাহরির নিষিদ্ধ এবং কিছু দেশে তাদের কার্যক্রম সীমিত করে দেয়া হয়েছে। এতে করে দেশটিতে সংগঠনটির কয়েক হাজার সমর্থক হতাশ হয়ে পড়েছেন।
হিজবুত তাহরিরের মুখপাত্র ইসমাইল ইউসান্তো জানান, সংগঠনটি চুপ করে বসে থাকবে না। উচ্চ আদালতে রায়ের বিরোধিতা করে আপিল করা হবে।
সংগঠনটির দুই হাজারের বেশি কর্মী-সমর্থকরা ওই রায়ের বিরোধিতা করে বুধবার ইন্দোনেশিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে তারা দমন এবং নিপীড়ন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পরবর্তী সময়ে সংগঠনটির কর্মীরা অাবারও এ ধরনের বিক্ষোভে রাস্তায় নামলে কঠোর অবস্থান নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটির পুলিশ। ইন্দোনেশিয়া পুলিশের মুখপাত্র সিতো ওয়াসিস্তো বলেন, বিক্ষোভসহ হিজবুত তাহরিরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে তাদের সংগঠন অবৈধ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেকারণে পুলিশ তাদেরকে কোনো রকম বিক্ষোভের অনুমতি দেবে না। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালে জেরুজালেমে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে হিজবুত তাহরিরের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির সদর দফতর লন্ডনে বলা হলেও মধ্য এশিয়া, ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়ায় এর শাখা আছে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়ায় সংগঠনটির শাখা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও সংগঠনটির সদস্যদের উপস্থিতি রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে এই সংগঠনটির মতাদর্শগত পার্থক্য না থাকলেও কৌশলগত পার্থক্য আছে।
সূত্র : আল জাজিরা, ওয়াশিংটন পোস্ট
কেএ/এসআইএস/জেআইএম