‘দরিদ্র পরিবারে যেন কোনো মেয়ের জন্ম না হয়’
পাকিস্তানি মডেল কান্দিল ব্যালোচের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর আগে তার বাবা আজিম সোশ্যাল মিডিয়ার এই সেলিব্রেটিকে স্মরণ করলেন অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে।
দেরা গাজি খান জেলা শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে শাহ সদরুদ্দিন এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে একটি গাছের নিচে বসে আছেন আজিম। বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রীর জন্য। স্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন এক আত্মীয়র বাড়িতে টাকা ধার নেয়ার জন্য। স্ত্রী ফিরলে তবেই খাবার কিনবেন তিনি।
পাকিস্তানি দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে আজিম বলেন, ‘আমি তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে চাই। তাকে স্মরণ করতে আমার কোনো লজ্জা নেই। সে আমাকে আর্থিকভাবে ও আবেগ দিয়ে সমর্থন দিতো।’
যারা এখনও কান্দিলের নামে কলঙ্ক লেপন করছে আমি তাদের বলতে চাই, ‘আমার শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত আমি তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করব।’
কান্দিলকে স্মরণ করে আজিম বলেন, ‘এমন একজন মেয়ে থাকায় তিনি সৌভাগ্যবান ছিলেন।’ কঠিন সময়ে পরিবারকে সাহায্য করেছিল সে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারে যেন কোনো মেয়ের জন্ম না হয়।’
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে আজিম বলেন, ‘কান্দিলকে খুনের জন্য তিনি কখনোই তার ছেলেকে ক্ষমা করবেন না।’ ভবিষ্যতে অনার কিলিং (পারিবারিক সম্মান রক্ষায় হত্যা) বন্ধ করার জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনে কঠোর শাস্তির বিধান তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
পুলিশি পদক্ষেপ, আইন ও পাকিস্তানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন আজিম। মেয়ে কান্দিল ব্যালোচের খুনের পেছনে মুফতি আব্দুল কাওয়িকে দায়ী করেন তিনি। আজিম বলেন, মুফতির সঙ্গে কান্দিলের ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার পর তা ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় তার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়।
পুলিশ এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি বলে অভিযোগ করেন পাকিস্তানি এই মডেলের বাবা। খুনের পর পুলিশ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নগদ অর্থ ও অন্যান্য সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন আজিম।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেলিব্রিটি কান্দিল ব্যালোচ নিজ ভাইয়ের হাতে ‘অনার কিলিং’র শিকার হন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খোলামেলা ছবি পোস্ট করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন কান্দিল। তার ২৫ বছরের ভাই ওয়াসিম ব্যালোচ বোনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
ওয়াসিম ওই সময় জানায়, মুসলিম নেতার সঙ্গে কান্দিলের ছবি প্রকাশ হওয়ার পরপরই বোনকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এসআইএস/আরআইপি