জাতিসংঘে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ কাতারের
কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের জেরে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার কাছে অভিযোগ করেছে কাতারের মানবাধিকার কমিটি। মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।
এর আগে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছিল কাতারের একটি মানবাধিকার সংগঠন। দেশ তিনটি কাতারের কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ সমর্থনের অভিযোগে সম্পর্কচ্ছেদ করায় শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন সংগঠনটির কাছে।
তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছিল কাতারের মানবাধিকার সংগঠন।
কাতারের অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, ৮ জুন বৃহস্পতিবার সৌদি আরব এবং তাদের মিত্ররা যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে কাতারের ৫৯ ব্যক্তি, ১২ প্রতিষ্ঠান এবং বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থার নাম প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ সমর্থনের অভিযোগ তোলে। তালিকা প্রকাশের পর কাতারের প্রতিষ্ঠানগুলো সৌদি আরবসহ তাদের মিত্র দেশগুলোর ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিল।
কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিটির (এনএইচআরসি) প্রধান আলি বিন স্মাইখ আল মাররি বলেন, উপসাগরীয় দেশগুলো কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের কারণে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হয়েছে। কাতারের জন্য সহানুভূতি প্রকাশকারীদের শাস্তির সিদ্ধান্তেরও নিন্দা জানান তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে উপসাগরীয় অবরোধের কারণে কাতারে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আলি বিন স্মাইখ আল মাররি।
এনএইচআরসি বলছে, কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের পর সৌদি নেতৃত্বাধীন অবরোধের প্রথম দশদিনে তাদের কাছে সাতশ ৬৪টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে।
এনএইচআরসি এর আগে জানিয়েছে, ক্ষতির ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক আইন সংস্থাকে নিযুক্ত করার চেষ্টা করছে তারা। কালো তালিকা প্রকাশ করে দেশগুলো উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘন করেছে বলেও মনে করে এনএইচআরসি।
আল মাররি দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘একযোগে কাতারকে বয়কটে উপসাগরীয় দেশগুলোর সিদ্ধান্ত যৌথ শাস্তি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ।’
গত ৫ জুন সৌদি আরবের নেতৃত্বে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। পরে সম্পর্ক ছিন্নের এই তালিকায় যোগ দেয়, লিবিয়া, ইয়েমেন, জর্ডান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালদ্বীপ। দেশগুলো কাতারের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগ করেছে। তবে কাতার সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের পর কাতারের জন্য আকাশ, স্থল ও সমুদ্র সীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলো। একই সঙ্গে কাতার থেকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন তাদের নাগরিকদের ১৪ দিনের মধ্যে নিজ দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া এসব দেশ থেকে একই সময়ের মধ্যে কাতারি নাগরিকদেরও ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কেএ/পিআর