ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকে নির্বাচনের ফল

প্রকাশিত: ০৩:২৩ এএম, ০৯ জুন ২০১৭

ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৮ শতাংশ। প্রায় চার কোটি ৭০ লাখ মানুষ ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।

এই ভোটের মাধ্যমে ওয়েস্টমিনিস্টার সংসদ হাউস অফ কমন্সে ৬৫০ আসনে এমপি নির্বাচিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়াই করছেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং প্রধান বিরোধী লেবার দলের নেতা জেরেমি করবিন।

সারা দেশে ফলাফলের ভিত্তিতে বর্তমানে কনজারভেটিভ ৩১৬টি আসনে জয়লাভ করেছে। আর লেবার দল ২৬৫টি, লিবেরাল ডেমোক্র্যাট ১১টি এবং স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট দল ৩২টি জয়লাভ করেছে।

বিদায়ী সংসদে কনজারভেটিভ দলের ছিল ৩৩০টি আসন, লেবার পার্টির ২২৯টি , স্কটিশ ন্যাশনালিস্টদের ৫৪টি আর লিবেরাল ডেমোক্র্যাটদের ৯টি।

Election

বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর থেরেসা মের এখন চলে যাওয়া উচিত। লন্ডনের ইসলিংটনে নিজের আসনে বিপুল ভোটে জয়ের পর করবিন বলেন, এই নির্বাচন ডাকা হয়েছিল সরকারকে নতুন ম্যান্ডেট দেয়ার জন্য। ম্যান্ডেট তিনি পেয়েছেন হারানো আসন, হারানো ভোট, হারানো কর্তৃত্বের মাধ্যমে।’

করবিন আরো বলেন, তার চলে যাওয়া উচিত যাতে এমন একটি সরকার আসতে পারে যারা সকল নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব করে।

তবে এক্সিট পোল-এ প্রাথমিকভাবে আভাস দেওয়া হয়েছিল যে, কনজারভেটিভরা ৩১৪টি আসন পাবে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কোনো একটি দলের এককভাবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ৩২৬টি আসন।

এদিকে, ডেভিড ক্যামেরনের ২০১০-১৫ সালের সরকারে উপ-প্রধানমন্ত্রী লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের প্রাক্তন নেতা নিক ক্লেগ তার আসন হারিয়েছেন। শেফিল্ডের আসনে লেবার পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের জন্য এই ফল বিশাল বিপর্যয়।

Election

অপরদিকে, স্কটিশ ন্যাশানালিস্ট পার্টি এসএনপির উপনেতা অ্যাঙ্গাস রবার্টসন হেরে গেছেন। তার আসনটি জিতে নিয়েছেন স্কটিশ কনজারভেটিভ প্রার্থী। এটি ছিল স্কটিশ কনজারভেটিভদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন।

স্কটল্যান্ডে টোরিরা এসএনপির কাছ থেকে আসন ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। স্কটল্যান্ডে এ পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে কনজারভেটিভরা তাদের আসন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।

লন্ডনের ইলিং-এ লেবার পার্টির প্রার্থী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুপা হক ১৩ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১৫ সালে তিনি মাত্র কয়েক’শ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন।

লন্ডনের ওয়ান্ডসয়োর্থ-ব্যাটারসি আসনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী এবং অর্থ প্রতিমন্ত্রী জেন এলিসন পরাজিত হয়েছেন। বিরোধী লেবার পার্টির প্রার্থী মার্শা ডি কর্ডোভা প্রায় আড়াই হাজার ভোটের ব্যবধানে এই শক্ত কনজারভেটিভ ঘাঁটি দখল করেছেন।

Election

আগাম নির্বাচন সম্পর্কে লেবার পার্টির উপ-নেতা টম ওয়াটসন বলেছেন, এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের কর্তৃত্ব খর্ব হয়েছে। মে এখন একজন ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি এখান থেকে হয়তো আর উত্তরণ করতে পারবেন না।

এবারের সাধারণ নির্বাচনে ২০১৫ সালের নির্বাচনের থেকে বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। তরুণ ভোটাররা প্রচুর সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

স্কটল্যান্ডে লেবার পার্টি স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (এসএনপি) হাত থেকে একটি আসন দখল করে নিয়েছে। গত নির্বাচনে স্কটল্যান্ডের ৫৯টি আসনের মধ্যে ৫৬টিই এসএনপি জিতেছিল। লেবার পেয়েছিল মাত্র একটি।

ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচন শেষে ‘এক্সিট পোল’ বা ভোট দেবার পর ভোটারদের মধ্যে জরীপে যে ফলাফল দেখা যাচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিশ্লেষকরাও বলছেন, অনেক আসনে ব্যবধান এতই কম যে ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে না।

Election

এক্সিট পোল-এ দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি সংসদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে এবং কোন দলই এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থায় থাকবে না। এই অবস্থাকে ব্রিটেনে ‘হাং’ বা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট বলা হয়। প্রাক্তন কনজারভেটিভ নেতা কেনেথ ক্লার্ক বলেছেন, এ ধরণের ঝুলন্ত সংসদ হবে সব চেয়ে খারাপ ফল।

নির্বাচনের ফলাফলে অনিশ্চয়তার কারণে ব্রিটিশ পাউন্ড অন্যান্য মুদ্রার বিরুদ্ধে কিছুটা মূল্য হারিয়েছে। মার্কিন ডলারের বিরুদ্ধে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ এবং ইউরোর বিরুদ্ধে এক শতাংশ মূল্য হারিয়েছে ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং।

প্রাক্তন কনজারভেটিভ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবোর্ন বলেছেন, ‘এক্সিট পোল’ যদি সঠিক হয়, তাহলে তা হবে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের জন্য একটি বিপর্যয়। সরকারের মেয়াদ শেষ হবার তিন বছর আগেই থেরেসা মে এই নির্বাচন ডেকেছিলেন। তার আশা ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছেড়ে দেয়ার পর আরো বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আলোচনার টেবিলে তার হাত শক্তিশালী হবে। কিন্তু ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে। তাই মের আশাপূরণ নাও হতে পারে।

টিটিএন/জেআইএম

আরও পড়ুন