নিহত বিএসএফ জওয়ানের বাড়িতে যোগীর সঙ্গে এল এসি, ফেরতও নিয়ে গেলেন
নতুন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের সদ্যনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) নিহত সদস্য প্রেমসাগরের পরিবারকে দেখতে গিয়ে এ বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি।
প্রেমসাগরের পরিবারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দেখা করতে যাওয়ার কথা। মুখ্যমন্ত্রী যাবেন বলে ‘বিশেষ’ ব্যবস্থার আয়োজন করে প্রশাসন। উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া গ্রামে প্রেমসাগরের বাড়িতে তাই এয়ার কন্ডিশনার (এসি) মেশিন, ঝাঁ-চকচকে সোফা, ২৪ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন।
শুধু তাই নয়, পুরো বাড়ি জুড়েই বিছিয়ে দেয়া হয় নরম গালিচা। মুখ্যমন্ত্রীর আরামে যেন কোনও ঘাটতি না থাকে, সে দিকে প্রশাসনের ছিল কড়া নজর। শুক্রবার বিএসএফের নিহত জওয়ান প্রেমসাগরের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী এলেন, দেখা করলেন এবং চলেও গেলেন। তার পরই সব ফাঁকা। যোগী আদিত্যনাথ চলে যাওয়ার আধা ঘণ্টা পরই খুলে নিয়ে যাওয়া হল সব কিছু।
মুখ্যমন্ত্রীর এ ধরনের আচরণে অপমানিত বোধ করেছেন ওই জওয়ানের পরিবার। বিরোধী শিবিরও মেতে উঠেছে যোগীর সমালোচনায়।
প্রেমসাগরের ছেলে ঈশ্বর জানিয়েছেন, ‘সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এ বাড়িতে তার পা রাখার দু’দিন আগে থেকে আমাদের অতিষ্ট করে তুলেছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা। আমাদের চার কামরার বাড়িতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর আরামে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য দু’দিন আগে থেকে এসি, কার্পেট, সোফা এমনকি নতুন তোয়ালের ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু তিনি বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সব খুলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
প্রেমসাগরের ভাই দয়াশঙ্কর যিনি নিজেও একজন বিএসএফ জওয়ান। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন এক-দু’দিন অপেক্ষা করতেই পারত। এতে আমাদের সরাসরি অপমান করা হয়েছে।’
গত ১ মে পাকিস্তান সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় বিএসএফ জওয়ান প্রেমসাগর। তার মাথা কেটে নিয়ে যায় পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট)। এই খবর জানার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিল প্রেমসাগরের গ্রামের লোকজন। একই সঙ্গে প্রেমসাগরের পরিবারের দাবি ছিল, মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ দেখা না করা পর্যন্ত জওয়ানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে না। শেষ পর্যন্ত আদিত্যনাথ তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং দেখা করার আশ্বাসও দেন।
গত শুক্রবার প্রেম সাগরের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন যোগী আদিত্যনাথ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হেড কনস্টেবল প্রেমসাগরের পরিবারকে সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এই মুখ্যমন্ত্রী।
এসআইএস/এমএস