লাদেন এখনো জীবিত, সিআইএ ভুয়া খবর ছড়িয়েছিল : দাবি স্নোডেনের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন গোয়েন্দা নজরদারির তথ্য ফাঁসকারী এডওয়ার্ড স্নোডেন এবার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাজেন্সির (এনএসএ) সাবেক চুক্তিভিত্তিক এ কর্মী বলেছেন, আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন এখন জীবিত আছেন; এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে তিনি বিলাসবহুল জীবন-যাপন করছেন। তার এ দাবির পক্ষে প্রমাণও আছে বলে জানিয়েছেন।
মার্কিন সরকারের গোপন নজরদারির গুরুত্বপূর্ণ নথি ফাঁসকারী স্নোডেন এনএসএ’র সাবেক ঠিকাদার। গোপন মার্কিন নথি ফাঁসের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়ায় রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
তবে আরেকটি বিস্ময়কর তথ্য ফাঁস করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন স্নোডেন। ‘ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেইলি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্নোডেনের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আছে যে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র অর্থায়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বের বাহামা দ্বীপে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করছেন লাদেন।
রাশিয়ার প্রভাবশালী দৈনিক মস্কো ট্রিবিউন বলছে, স্নোডেন দাবি করেছেন যে, আল-কায়েদার সাবেক অখ্যাত নেতা ওসামা বিন লাদেন আসলে এখনো জীবিত আছেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) তাকে নগদ অর্থায়ন করছে।
স্নোডেনের দাবি, অামার কাছে নথি আছে, বিন লাদেন এখনো সিআইএ’র তত্ত্বাবধানে আছে। ‘তিনি (লাদেন) এখনো মাসে এক লাখ ডলার পাচ্ছেন; যা নাসাউ ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করছে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন তা আমি নিশ্চিত নই। তবে ২০১৩ সালে তার পাঁচ স্ত্রী ও তাদের সন্তানদের নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করেছেন।’
মার্কিন এই সাবেক অ্যাজেন্টের দাবি সিআইএ’র ছড়ানো ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর খবর ভূয়া। মৃত্যুর খবর প্রচারের পর লাদেন ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে বাহামা দ্বীপের গোপন স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়।
স্নোডেন বলছেন, ওসামা বিন লাদেন দীর্ঘদিন ধরে সিআইএ’র সবচেয়ে দক্ষ কর্মী ছিলেন। যদি যুক্তরাষ্ট্রের এলিট কমান্ডো বাহিনী নেভি সীল অভিযান চালিয়ে তাকে হত্যা করেই থাকে তাহলে অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তারা কী ধরনের বার্তা পাঠিয়েছিল? পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা পাকিস্তান সিক্রেট সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা ভূয়া মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছিল।
তখন থেকেই প্রত্যেকের বিশ্বাস লাদেন মারা গেছে, কেউ তাকে খুঁজছে না, সুতরাং তার নিখোঁজ থাকাটা অত্যন্ত সহজ। দাড়ি ও সামরিক জ্যাকেট ছাড়া কেউ তাকে চিনতে পারে না।
নাইজাপিকস বলছে, বিতর্কিত এই দাবি ২০১৫ সালে প্রকাশিত তার বইয়ে স্থান পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পলাতক এই অ্যাজেন্টকে ক্ষমার দাবিতে ২০১৫ সালে অন্তত এক লাখ ৬৮ হাজার মানুষ একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেন। তবে ওই বছরের ২৮ জুলাই হোয়াইট হাউস পিটিশনটি প্রত্যাখ্যান করে।
হংকংয়ের একটি গোপন স্থানে বেশ কয়েক সাংবাদিক স্নোডেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এসময় তাকে প্রশ্ন করা হয় কেন তিনি নিজ দেশ থেকে পালিয়েছেন? এর জবাবে স্নোডেন বলেন, আমি এমন সমাজে বসবাস করতে চাই না যেখানে এ ধরনের কাজ হয়...আমি এমন বিশ্বে বসবাস করতে চাই যেখানে আমি সবকিছুই করতে পারবো। দ্য গার্ডিয়ানের কাছে স্নোডেনের এই সাক্ষাৎকারের রেকর্ড রয়েছে।
এসআইএস/জেআইএম