যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি তরুণীকে যৌন হয়রানি : বিএনপি নেতা গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি এক তরুণীকে অপহরণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানির অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নিউইয়র্ক সিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খালেককে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ।
এবিসি৭নিউইয়র্ক টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওই তরুণী। খালেকের ট্যাক্সিতে বন্ধুত্বপূর্ণ যাত্রা শুরুর পর কীভাবে তা ভয়ঙ্কর অপহরণে রূপ নেয় সে চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি ভয় পেয়েছিলাম। এই লোক কী করতে যাচ্ছে। ২৭ বছর বয়সী ওই তরুণীর সময় কাটছে এখনো ঘোর আতঙ্কে। তিনি বলেন, গত ৭ এপ্রিল রাতে ব্রঙ্কসের কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে বন্ধু খালেক তাকে নিজের ট্যাক্সিতে করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব দেন। পরে খালেক তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে কানেকটিকাটে যায়। এ সময় তাকে এক হাজার ডলারের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দেয়।
ওই তরুণী বলেন, এখানে এক হাজার ডলার আছে। তুমি এটা নিতে পারো। আমার সঙ্গে ঘুমাবে। তাহলে এই অর্থ তোমার হবে।
ভয়াবহ এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন অভিবাসী ট্যাক্সি থেকে লাফিয়ে পালিয়ে আসেন। পরে ৯১১’তে ফোন করেন। এছাড়া তিনি যে নিউইয়র্কে নেই সে বিষয়টিও বুঝতে পারেন। কানেকটিকাটের নরওয়াক থেকে ৪০ মাইল দূরে ছিলেন ওই সময়।
তিনি বলেন, সে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে, আমি নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছি।
বাংলাদেশি এই তরুণীর স্বামী বলেন, সে আমার স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেয়েছিল। এটাই হচ্ছে মূলকথা। ঘটনাক্রমে ওই সময় এক মোটরসাইকেল আরোহী তাকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করেন।
গত বৃহস্পতিবার ট্যাক্সি চালক খালেককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু পরদিন আদালত থেকে মুক্তি পায় সে। শহিদুল দম্পতি যে বাসায় থাকেন; সেই বাসার নিচতলায় থাকেন বিএনপি নেতা খালেক। তবে এ ব্যাপারে খালেকের পরিবার কোনো মন্তব্য করেনি।
৪৭ বছর বয়সী খালেক ১৯৯৯ সাল থেকে দেশটিতে ট্যাক্সি চালক হিসেবে কাজ করছে। মার্কিন পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত পাঁচবার গ্রেফতার হয়েছিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই নাগরিক।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে গত গ্রীষ্মে খালেক এক নারীকে তার ট্যাক্সিতে ডেকে তুলে নেয়। পরে ওই নারীকে পর্নোগ্রাফি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের আহ্বান জানায় সে। পরে এ ঘটনায় দায়ের করা এক মামলায় এক হাজার ডলার জরিমানা গুণতে হয় তাকে। তবে বর্তমানে তার লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।
খালেক মুক্ত হওয়ায় এখন ওই তরুণী ও তার স্বামী আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশি এই দম্পতি বলছেন, খালেক মুক্ত থাকায় তারা এখন ভয়ের মধ্যে আছেন।
তরুণী বলেন, সে আমার জীবনের আরো ক্ষতি করবে। অন্য তরুণীদের সঙ্গেও সে একই কাজ করতে পারে।
সূত্র : এবিসি৭এনওয়াই।
এসআইএস/জেআইএম