কে এই ম্যাক্রোঁ?
ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মতো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু খুব অল্পসংখ্যক রাজনীতিকেরই আছে। অভিজাত শ্রেণির ন্যাশনাল স্কুল অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে স্নাত্ক শেষ করা ম্যাক্রোঁ দেশটির অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।
তবে একেবারে মূলধারার রাজনৈতিক দলের বাইরে থেকে ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক শোরগোল ফেলেছেন মধ্যপন্থী ম্যাক্রোঁ। স্নাত্ক শেষে দেশটির রথচাইল্ড অ্যান্ড সাই ব্যাংকে একজন বিনিয়োগকারী ব্যাংকার হিসেবে কাজ শুরুর আগে ফ্রান্সের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক পরিদর্শক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি।
মূলধারার দলের সঙ্গে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার মাত্র তিন বছরের। দেশটির সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে তিন বছর থাকার পর ২০০৯ সালে স্বতন্ত্র রাজনীতিক হিসেবে রাজনীতিতে নামেন তিনি। ৩৯ বছর বয়সী এই রাজনীতিক প্রথম দায়িত্ব পালন করেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে। পরে ম্যানুয়েল ভালস সরকারের অর্থনীতি, শিল্প ও ডিজিটাল কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন ম্যাক্রোঁ।
পশ্চিমা বিশ্ব ক্রমবর্ধমানহারে কট্টর ডানপন্থার দিকে ঝুঁকলেও ম্যাক্রোঁ নিজের অবস্থান মধ্যপন্থায় অটল থাকেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ব্রেক্সিটের পর বিশৃঙ্খলার সঙ্গে নিত্য পরিচিত ফরাসি নাগরিকদের প্রতি তার অবস্থান তুলে ধরেন সুষম নীতিতে বিশ্বাসী ম্যাক্রোঁ।
বিরোধীদের বাম-ডান ভেদাভেদ ভুলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া থেকে বিরত থেকেছেন তিনি। একই সঙ্গে অভিবাসীদের জন্য উন্মুক্ত নীতির কথা বলছেন স্বতন্ত্র রাজনীতিক থেকে প্রেসিডেন্ট বনে যাওয়া মধ্যপন্থী ম্যাক্রোঁ।
গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি আলজেরিয়ায় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকারের নিন্দা জানান। বলেন, এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। এই মন্তব্যের পর ডানপন্থীদের অনেকেই তিরস্কার জানান ম্যাক্রোঁকে। তবে এজন্য ক্ষমা চাইলেও নিজের মন্তব্যে দৃঢ় থাকেন তিনি।
তার বিস্ময়কর রাজনীতির ব্র্যান্ড, তারুণ্যে ভরপুর চেহারা ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথী ফ্রাঁসোয়া ফিলনের হঠাৎ ব্যর্থতাকে পুঁজি করে নির্বাচনী প্রচারণার সময় জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে ম্যাক্রোঁর। ফলে প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনের আগে ২৭ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেতে যাচ্ছেন বলে মতামত জরিপে উঠে আসে; যা তাকে দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে দৃঢ় অবস্থান তৈরিতে সহায়তা করে।
যাই হোক নতুন এই প্রেসিডেন্টের চ্যালেঞ্জ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। উদারপন্থী অর্থনৈতিক হিসেবে তার আর্থিক কিছু নীতি আছে; ২০০৭ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ধস শুরুর সময় থেকে এক দশকে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে তার নীতির সামান্য পার্থক্য রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী ম্যাক্রোঁ ইইউ’র কট্টর সমর্থক। দৃঢ় অবস্থানের কারণে ডান ও বামপন্থী ভোটারদের নিজ শিবিরে টানতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
এখন ম্যাক্রোঁ যদি দেশটির বৃহৎ সংখ্যক বিভক্ত একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝাতে পারেন যে; তিনি কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল ফ্রন্ট্রের লি পেনের চেয়ে বেশি কিছু করবেন; তাহলে প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলিসি প্রাসাদে তার সামনে তেমন কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
সূত্র : আল-জাজিরা।
এসআইএস/পিআর
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক
- ১ প্রচুর অ্যাটাক ড্রোন তৈরির নির্দেশ কিম জং উনের
- ২ প্লেনে যান্ত্রিক ত্রুটি, ঝাড়খণ্ডে আটকে গেলেন মোদী
- ৩ ১০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পুরাকীর্তি ভারতকে ফিরিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র
- ৪ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর পার্লামেন্ট নির্বাচনেও জয় পেলো দিশানায়েকের জোট
- ৫ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের কিছু বলার দরকার নেই