ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা শরণার্থী যুবকের
ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশী সিরীয় এক যুবক ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে সেলফি তুলে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া একটি খবরে তাকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এর প্রতিবাদেই তিনি ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। খবর বিবিসির।
সাম্প্রতিক সময়ে নিউজফিডে মিথ্যা সংবাদ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই ফেসবুকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের এমন খবর এলো।
জার্মানিতে সামাজিক মাধ্যমে অভিবাসী ও শরণার্থীদের এরকম মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। মিথ্যা খবরের শিকার হওয়া সিরীয় ওই যুবকের নাম আনাস মোদামানি।
আনাস যেই শরণার্থী শিবিরে থাকতেন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ওই শিবির পর্যবেক্ষণ করেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। তখনি মেরকেলের সঙ্গে সেলফি তোলেন আনাস।
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার দারায়া শহর থেকে পালিয়ে জার্মানিতে এসেছিলেন আনাস। তুরস্ক, গ্রিস এবং সার্বিয়া হয়ে শেষ পর্যন্ত বার্লিনে উঠেন তিনি।
প্রথমে সামাজিক মাধ্যমে ব্রাসেলস হামলার সঙ্গে তাকে যুক্ত করা হয়। তিনি জানান, সামাজিক মাধ্যমে যখন হামলাকারী হিসেবে তার ছবি ছড়িয়ে পড়তে লাগলো তখন তিনি মিউনিখে গিয়েছিলেন তার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে।
সেসময় তার অনেক বন্ধু তাকে বাড়িতে বসে থাকার পরামর্শ দেয়। তিনি বাইরে বের হওয়াও বন্ধ করে দেন। কেউ কেউ তাকে পুলিশের কাছে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলো।
আবার যখন বার্লিনে ক্রিসমাস মার্কেটে লরি হামলা চালানো হলো তখন পুলিশ জানিয়েছিল, হামলাকারী একজন শরণার্থী। তখন আবারো নতুন করে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হন আনাস।
তিনি জানান, সেসময় তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে রেখেছিলেন। কিন্তু জার্মানিতে যে নারী তাকে আশ্রয় দিয়েছেন তিনি তার কাছে বেশ কিছু ছবি দেখান। সেগুলো প্রমাণ করে তিনি একজন সন্ত্রাসী। এতে করে আনাস খুব হতাশ হয়ে ওঠেন। আর তখনই তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বর্ণবাদী পোস্ট মুছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফেসবুকের প্রধান মার্ক জুকারবার্গ এবং অন্যান্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে।
জার্মানির আইনে ঘৃণাকে উস্কে দিতে পারে এমন প্রচারণা একেবারেই নিষিদ্ধ। গত বছরের নভেম্বরে এই অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেন আইনজীবী চান জু জুন।
তিনি বলেন, ‘বানোয়াট খবরের প্রচার বন্ধ করতে ফেসবুক তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। সব বানোয়াট খবরই বেআইনি নয়। কিন্তু যখন মানহানির ঘটনা ঘটে তখন সেসব খবর সরিয়ে নেওয়া উচিত।’
এদিকে, ফেসবুকের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কিছু ছবি সরিয়ে ফেলার জন্যে জু জুনের কাছ থেকে তাদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এসব ছবি আনাসের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে লঙ্ঘন করছে।
তিনি জানান, তাদের কাছে অনুরোধ করার পরপরই লোকজন যেন সেগুলো দেখতে না পারে সে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে তিনি মনে করেন না যে ফেসবুকের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ভিত্তি আছে।
কিন্তু জু জুনের দাবি, সব ছবি সরানো হয়নি। আনাস সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত এমন কিছু ছবি এখনও ফেসবুকে পাওয়া যাচ্ছে। জার্মানির একটি আদালতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার শুনানি হবে।
টিটিএন/আরআইপি
আরও পড়ুন
সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক
- ১ শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের চিঠি গ্রহণ করেছে ভারত
- ২ তসলিমা নাসরিনের ‘লজ্জা’ অবলম্বনে নির্মিত নাটকে মমতার নিষেধাজ্ঞা
- ৩ ট্রাম্পের এআই উপদেষ্টা হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত শ্রীরাম কৃষ্ণান
- ৪ বাংলাদেশের জন্য উৎপাদিত বিদ্যুৎ অন্য প্রতিবেশী দেশে বেচতে চায় আদানি
- ৫ নিউইয়র্কে পাতাল ট্রেনে নারীর গায়ে আগুন ধরিয়ে হত্যা