রক্তাক্ত হামলায় নতুন বছর শুরু তুরস্কে
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের নাইট ক্লাবে বন্দুকধারীর হামলা দেখিয়ে দিচ্ছে ২০১৬ সালের সহিংসতার শেষ নেই। দেশে দেশে বছর জুড়ে হামলা ও রক্তপাতের রেশ কাটেনি নতুন বছরের শুরুতেও।
২০১৬ সালকে পেছনে ফেলে নতুন বছর উদযাপনে মেতে উঠেছিলেন তুরস্কের নাগরিকরা। নতুন বছর শুরুর মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে বন্দুকধারীর হামলায় আবারো রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে তুরস্ক।
গত বছর দেশটিতে বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটিতে রূপ নিয়েছিল সহিংসতায়। এর মাঝেই সব কিছুকে পেছনে ফেলে নতুন বছর বরণের মেতে উঠেছিল তুরস্কের নাগরিকরা। কিন্তু নতুন বছর বরণের অনুষ্ঠানে লেগেছে রক্তের দাগ; ইস্তাম্বুলের রেইনা ক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় প্রাণ গেছে ৩৯ জনের।
দেশটির নাগরিকরা পরষ্পরকে শুভ কামনাই জানাননি; অনেকেই শান্তিপূর্ণ ২০১৭ সালের কামনাও করেছিলেন। নতুন বছরে পদার্পনের মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে যে, তুরস্কে সহিংসতা শেষ হওয়ার ইঙ্গিত নেই। রেইনা নাইট ক্লাবে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর আগে, ক্লাবের প্রবেশ পথে এক পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে বন্দুকধারী।
নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় হামলাকারী। স্থানীয় সময় রোববার সকালেও এ অভিযান অব্যাহত ছিল। পরে ওই হামলাকারীকে ধরতে অভিযান শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, নাইট ক্লাবে হামলায় নিহতদের মধ্যে ১৬ বিদেশি নাগিরক রয়েছেন। এ ছাড়া বাকি ১৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২০১৬ সাল তুরস্কের জন্য ছিল বিশেষ সহিংসতাপূর্ণ একটি বছর; ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ও জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অথবা কুর্দি বিদ্রোহীদের বোমা হামলায় কেঁপে উঠে তুরস্ক। গত ১০ ডিসেম্বর বেসিকতাস ফটুবল ক্লাব স্টেডিয়ামের বাইরে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত হয়।
সর্বশেষ হামলার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এক বিবৃতিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই শেষ করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে জঘন্য হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা নৈরাজ্য সৃষ্টি, জনগণের মনোবল ভেঙে দেয়া ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
এদিকে, নতুন বছরের প্রথম প্রহরের হামলায় দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। তবে কুর্দি বিদ্রোহীদের অপছন্দনীয় লক্ষ্য হয়ে থাকতে পারে নাইট ক্লাব। এর আগেও দেশটির বিভিন্ন সরকারি ভবন ও নিরাপত্তা বাহিনী কুর্দি বিদ্রোহীদের বোমা হামলার লক্ষ্য হয়েছে।
সূত্র : টাইমস, বিবিসি।
এসআইএস/এমএস