ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আন্তর্জাতিক

আইএস কী গলার কাঁটা হচ্ছে হিলারির?

প্রকাশিত: ০৯:৪১ এএম, ০২ নভেম্বর ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। নির্বাচনকে সামনে রেখে চরম ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পর পর তিনটি প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প ও হিলারি। সেসব বিতর্কে হিলারির কাছে একেবারে ধরাশায়ী ট্রাম্প। কোনোভাবেই হিলারির কাছাকাছি যেতে পারছিলেন না এই ধনকুবের ব্যবসায়ী। বিতর্ক-পরবর্তী জরিপেও হিলারির জনপ্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মত।

তবে নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে হিলারির ব্যক্তিগত ই-মেইল পুনরায় তদন্তের ঘোষণা দেয় এফবআই। আর এতেই নড়েচড়ে বসেন ট্রাম্প। কারণ হিলারির এই ই-মেইল বিতর্ক তাকে কিছুটা সুবিধাজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।

এতদিন পর্যন্ত যেখানে জনমত জরিপে হিলারি ছিলেন শীর্ষে সেখানে নির্বাচনের মাত্র পাঁচদিন আগে হিলারিকে টপকে এক পয়েন্টে এগিয়ে গেছেন ট্রাম্প।

islamic

বুধবার এবিসির এক নতুন জরিপে দেখা গেছে, হিলারিকে টপকে এক পয়েন্টে এগিয়ে গেছেন বিতর্কের জন্ম দেয়া
ধনকুবের ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত ২৩ অক্টোবরের এক জরিপ অনুযায়ী, হিলারির চেয়ে ১২ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। ওই জরিপের পর বলা হয়েছিল, ট্রাম্পের পক্ষে এই ব্যবধান টপকানো আসলেই সম্ভব নয়। কিন্তু সেই না কেই হ্যাঁ করে দেখিয়েছেন ট্রাম্পের সমর্থকরা।

অবশ্য হিলারির প্রচারণা শিবিরের দাবি, ট্রাম্প এগিয়ে নন। আসলে এর পেছনে দেশের কিছু সংবাদমাধ্যমের রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। তাছাড়া তাদের অভিযোগের তীর এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির দিকেও। কোমিই হিলারির ই-মেইল নিয়ে নতুন করে তদন্তে নেমে তার জনপ্রিয়তায় ধস নামিয়েছেন বলে দাবি করেছেন হিলারি সমর্থকরা।

এদিকে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র আর্নেস্ট জস জানিয়েছেন, নতুন করে হিলারির ই-মেইল তদন্ত নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে খোদ এফবিআই কর্মকর্তারাই এ বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কারণ নতুন এই তদন্তের পরই ট্রাম্পের চেয়ে হিলারির জনপ্রিয়তা কমে গেছে।

অপরদিকে তীরে এসে হিলারির তরী ডুবিয়েছে উইকিলিকস। সম্প্রতি উইকিলিকসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আইএসের প্রতিষ্ঠাতা। আইএসের জন্য যাদের কাছ থেকে হিলারি অর্থ সংগ্রহ করেছেন, সেসব দেশের নামসহ পুরো তালিকা প্রকাশ করেছে উইকিলিকস।

উইকিলিকস হিলারির যেসব ই-মেইল ফাঁস করেছে, তাতে আইএস প্রতিষ্ঠায় হিলারি এবং ওবামার সম্পৃক্ততার শক্তিশালী প্রমাণ রয়েছে। অথচ বেশ কিছু প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম এসব খবর প্রকাশ করছে না বলে অভিযোগ এনেছেন ট্রাম্প।

হিলারির ফাঁস হওয়া ই-মেইলে আইএস এবং অন্যান্য সুন্নি সংগঠনকে অর্থসহায়তায় কাতার এবং সৌদি আরবের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সৌদি আরব এবং কাতারের কাছ থেকে বড় ধরনের অর্থসহায়তা পাওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন হিলারি। কিন্তু এই দুটি দেশ থেকেই তিনি সবচেয়ে বেশি অর্থসহায়তা পেয়েছেন।

হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি করেছিলেন। ওইসব দেশ হিলারিকে তার সংগঠনের জন্য বড় ধরনের অর্থসহায়তা দিয়েছিল। হিলারির কারণেই এসব অস্ত্র সৌদি, কাতার এবং লিবিয়া হয়ে জঙ্গিদের হাতে পৌঁছেছে। আর এভাবেই জন্ম হয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের।

islamic
এমন তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর এখন স্বাভাবিকভাবেই একটা কথা মনে হচ্ছে যে, নির্বাচনের মোড় হয়তো ঘুরে যাবে। কেননা সারাবিশ্বেই জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট একটি আতঙ্ক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে খিলাফত রাষ্ট্রের ঘোষণা দিয়েছে তারা। আইএসের তাণ্ডবে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এসব দেশ ছাড়াও আরো বেশ কিছু দেশে ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।

এমন একটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যদি সত্যিই হিলারির সম্পৃক্ততা থাকে এবং তিনি যদি এই জঙ্গিগোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়ে থাকেন তবে মার্কিনিরা কখনোই তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করবে না। অপরদিকে হিলারি প্রেসিডেন্ট না হলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পই হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অথচ নারীদের প্রতি অশালীন আচরণ, যৌন হয়রানি, মুসলিম বিদ্বেষী, শরণার্থীদের প্রতি বিরূপ মনোভাব, ইনকাম ট্যাক্স গোপন ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ইতোমধ্যেই বেশ বিতর্ক তৈরি করেছেন ট্রাম্প। হিলারির পরিবর্তে তিনি নির্বাচিত হলে বিশ্ব কতটা নিরাপদ থাকবে সেটাও ভাবনার বিষয়।

৮ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকেই এখন তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নিয়ে সব দেশেই নানা ধরনের জল্পনা কল্পনা রয়েছে। নির্বাচনের শেষ সময়ে মনে হচ্ছে হিলারি বা ট্রাম্প কেউই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার উপযুক্ত নন। এমন একটি উন্নত দেশের নাগরিকরা এমন দুই প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেছেন, যারা কেউই তাদের দেশই শুধু নয় বরং পুরো বিশ্বের জন্যই দুর্যোগ বয়ে আনবে।

টিটিএন/এবিএস

আরও পড়ুন