ভারতে অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দেশটির কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের পুলিশ।
অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের আয়োজিত একটি কাশ্মীর বিষয়ক সেমিনারে ভারত ও দেশটির সেনাদের বিরুদ্ধে লাগাতার শ্লোগান দেয়া হয়েছে।
তবে অ্যামনেস্টি দাবি করছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনার কোনো ভিত্তিই থাকতে পারে না।
অ্যামনেস্টি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে গত দু`তিনদিন ধরেই বেঙ্গালুরুতে তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপির ছাত্র শাখা।
অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়াকে ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত গত শনিবার রাতে, যখন ভারত-শাসিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আলোচনার জন্য শহরে তারা একটি সেমিনারের অয়োজন করেছিল। সেমিনারের একজন বক্তা, কাশ্মীরের হিন্দু পণ্ডিত নেতা আরকে মাট্টু দাবি করেছিলেন ভারতীয় সেনার মতো সুশৃঙ্খল বাহিনী দুনিয়াতে কমই আছে।
আর তারপরই সভাতে উপস্থিত কাশ্মীরি যুবকরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন, তারা কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এই শ্লোগান দেয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রোববার থেকেই বেঙ্গালুরুতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপির ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ।
মঙ্গলবারও তারা শহরের রাজপথে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে তুমুল হাঙ্গামা চালিয়েছে।
অনেকটা তাদের চাপের মুখেই বেঙ্গালুরুর পুলিশ অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহসহ আরো নানা অভিযোগে এফআইআর দাখিল করে।
বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা সাকেত বহুগুণা বলেন, `অ্যামনেস্টি ও তাদের মতো আরো কিছু এনজিও বারবার এটাই বলে চলেছে কাশ্মীরে সব সমস্যার মূলে আছে ভারতীয় সেনা। তারা এমন একটা ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাইছে যে কাশ্মীরের মুসলিমরা সেনার হাতে নির্যাতিত।`
অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া অবশ্য বিবৃতি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা এই ধরনের যাবতীয় অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। বরং অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার প্রধান আকর প্যাটেল বলেছেন, তাদের নাম কেন এফআইআরে এসেছে সেটাই বোধগম্য নয়।
কর্ণাটকের রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই দিলেও দিল্লিতে দলের জাতীয় মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি বলছেন, একটা প্রতিষ্ঠানকে এভাবে কাঠগড়ায় তোলা যায় কি না তা নিয়ে তার সন্দেহ আছে।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া আবার যুক্তি দিচ্ছেন, একটা সভায় দেশবিরোধী স্লোগান ওঠার পরও সরকার হাত গুটিয়ে থাকতে পারে না। তাই বিষয়টি নিয়ে তার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
বিএ