ইইউ ছাড়ল যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকবে, না ছেড়ে যাবে সে প্রশ্ন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার যে ঐতিহাসিক গণভোট হয়ে গেছে দেশটিতে তার আনুষ্ঠানিক ফল পাওয়া গেছে। ৫২ শতাংশ ভোট ইউরোপ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে পড়ায় জোটের সঙ্গে ৪৩ বছরের পথচলার শেষ হচ্ছে ইংল্যান্ডের।
যুক্তরাজ্য ইইউয়ে থাকবে, না ছেড়ে যাবে সে প্রশ্ন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টায় (বিএসটি) ভোট শেষ হওয়ার পর মনে করা হচ্ছিল, ভোটের রায় ব্রিটেনের ইউরোপে থেকে যাওয়া পক্ষের দিকেই যাবে। কিন্তু ফল আসতে শুরু করলে দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসে।
বৃহস্পতিবারের ভোটে ভোটারদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়: যুক্তরাজ্যের কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থাকা উচিৎ, না কি ছেড়ে যাওয়া উচিৎ?
সেই প্রশ্নের উত্তর গণভোটের ফলাফল থেকেই পাওয়া গেল। তার মানে অধিকাংশই চিন্তা করে যে, ইইউয়ের সদস্য হিসেবে ব্রিটেনের থাকা উচিত নয়। আর একারণেই ইইউ ছাড়তে হলো ব্রিটেনকে।
এর আগে লন্ডন এবং স্কটল্যান্ড দৃঢ়ভাবে যুক্তরাজ্যের ইইউয়ে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু ওই ভোটও ব্রিটেনের ইইউয়ে থাকা নিশ্চিত করতে পারেনি।
ইউকেআইপির নেতা নাজেল ফারাজে এই গণভোটের ফলাফলকে ব্রিটেনের স্বাধীনতার দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ভোটের ফলাফল ১৯৮৫ সালের পর ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের পতন ঘটালো। এর ফলে বিশ্ব শেয়ার বাজারও ব্যাপকভাবে প্রভিাবিত হচ্ছে। এই গণভোটটিকে ব্রিটেনের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল এক সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৯২ সালের পর সবচেয়ে বেশি মানুষ এই গণভোটে অংশ নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের থাকা না থাকার গণভোটে প্রায় ৩০ মিলিয়ন মানুষ অংশ নিয়েছে।
ওয়েলস, লন্ডনের বাইরে ইংল্যান্ডের অধিকাংশ এলাকা ব্রেক্সিটের ভোটে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভোটার গণভোটে অংশ নিয়েছে।
এর আগে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ডেইলি মেইল ও টেলিভিশন আইটিভির এক জরিপে বলা হয়েছিল, ইইউতে থাকতে চায় ৪৮ শতাংশ ভোটার, বিপরীতে ইইউ ত্যাগের পক্ষে ৪২ শতাংশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেছে ভোটাররা। লণ্ডনের মেয়র বোরিস জনসন ও বিচারমন্ত্রী মাইকেল গোভ সহ ডানপন্থী সংরক্ষণশীল নেতাদের দাবী, ইইউ থাকার কারণে ব্রিটিশ সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।
লেবার দলের চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেল জানান, গণভোটের কারণে পাউন্ডের ৩ ভাগ পতন হয়েছে। এদিকে গণভোটে ইইউ ছাড়ার পর ইউরোর বিপরীতে পাউন্ডের পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৫ ভাগ। ইইউ ছাড়ার কারণে ব্রিটেনের অর্থনীতে বড় ধরনের পরিবর্ত আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা।
এনএফ/টিটিএন/পিআর