ইউরোপে থাকা না থাকা নিয়ে বিভক্ত ব্রিটেন
ইউরোপের সঙ্গে থাকা না থাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার গণভোটের আয়োজন করেছে ব্রিটেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া বা থাকার এই গণভোটকে বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট।
ব্রিটেনে বসবাসরত ব্রিটিশ, আইরিশ ও কমনওয়েলথ নাগরিকদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বা তার বেশি এবং বিদেশে অবস্থানরত ব্রিটেনের যেসব নাগরিকের নাম অন্তত ১৫ বছর ধরে ভোটার তালিকায় আছে তারাই এই গণভোটে অংশ নিতে পারবেন। খবর বিবিসির।
গণভোটকে সামনে রেখে ইতিহাসের বৃহত্তম সরাসরি টিভি বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই পক্ষের প্রথম সারির নেতারা।
স্মরণকালের বৃহত্তম এই সরাসরি টিভি বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হয় ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। ছয় হাজারের মত মানুষ এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
বিবিসিতে সরাসরি সম্প্রচারিত এই গ্রেট ডিবেটে দুই ঘন্টা ধরে অভিবাসন, অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে তর্কযুদ্ধ করেন উভয় পক্ষের নেতারা।
ঐতিহাসিক এই ভোট নিয়ে ব্রিটেন এখন অনেকটাই বিভক্ত। পক্ষ-বিপক্ষের দুই শিবিরের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর প্রচারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত আক্রমণের অভিযোগও উঠেছে।
যারা ইউরোপ থেকে বেরিয়ে যেতে চান সেই লিভ পক্ষে ছিলেন লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন। অন্যদিকে যারা ইউরোপের সঙ্গে থাকতে চান অর্থাৎ রিমেইন পক্ষে ছিলেন স্কটিশ টোরি নেত্রী রুথ ডেভিডসন।
ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে যারা প্রচার চালাচ্ছেন তাদের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে অভিবাসনের বিষয়টি। আর যারা ইইউতে থাকার পক্ষে বলছেন তাদের প্রচারের ভিত্তি হল অর্থনীতি।
লিভ এর প্রচারকরা অভিবাসীদের ব্রিটেনে আসা বন্ধ করতে চায়। বিশেষ করে ইউরোপ থেকে কেউ যাতে অবাধে ব্রিটেনে এসে বসবাস করতে না পারে সে দিকেই সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন তারা। আর সেজন্য ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা জরুরি বলে মনে করেন তারা।
অন্যদিকে রিমেইন গ্রুপ বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এলে ৫০ কোটি মানুষের বাজার হারাবে ব্রিটেন। তাতে অর্থনীতিতে আবার ধস নামবে। আর এই ধস এক যুগেও কাটিয়ে ওঠা যাবে না।
সমাপনী বক্তব্যে জনসন বলেন, ব্রিটেনবাসী যদি লিভকে ভোট দেয় তাহলে বৃহস্পতিবার হতে পারে আমাদের দেশের স্বাধীনতা দিবস। এসময় তার সমর্থকেরা উঠে দাঁড়িয়ে তাকে জয়ধ্বনি দেয়।
আর রিমেইন পক্ষের হয়ে সমাপনী বক্তব্যে ডেভিডসন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। নইলে আমাদের শুক্রবার সকালে আর ফেরার সুযোগ থাকবে না।
মূলত ইইউ গণভোট নিয়ে প্রচারণায় ভোটারদের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার এটাই ছিল শেষ সুযোগ।
টিটিএন/এবিএস