ব্রিটেনে রোজার সময় পরীক্ষা নিয়ে বিপাকে মুসলিম শিক্ষার্থীরা
ব্রিটেনে বসবাসরত মুসলমানরা ৩৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ রমজানের দিন অতিবাহিত করছেন। দেশটিতে মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন সেহেরি থেকে ইফতার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১৯ ঘণ্টা। এই দীর্ঘ সময় রোজা রেখে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাও দিতে হচ্ছে। খবর বিবিসির।
ব্রিটেনে এবছর জিসিএসই পরীক্ষা পড়েছে রমজান মাসে। এ নিয়ে শিক্ষকদের একটি ইউনিয়ন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে তারা যেন তাদের পরীক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেয়। এত দীর্ঘ সময় রোজা রাখলে তাদের ফলাফল খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।
ব্রিটেনের ধর্মীয় নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, যেসব শিক্ষার্থীর জন্য রোজা রেখে পরীক্ষা দেয়াটা খুব কষ্টকর হয়ে পড়ছে তাদের প্রতিদিন রোজা না রাখলেও চলবে।
মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকে এ নিয়ে বেশ দ্বন্দ্বে পড়েছেন। তারা বুঝতে পারছেন না কোনটাকে প্রাধান্য দেবেন। ধর্মীয় কারণে তারা রোজাকেই প্রাধান্য দিতে চাচ্ছে আবার পরীক্ষাকেও কম গুরুত্ব দিলে হচ্ছে না।
ল্যাংকারশায়ারের নেলসনের দুই শিক্ষার্থী জয়নাব ও আয়েশা। তারা দুজনেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। জয়নাব প্রতি বছরই রোজা রাখে। কিন্তু এবার পরীক্ষার জন্য সব রোজা করতে পারছে না।
এ নিয়ে জয়নাবের খুব মন খারাপ। সে জানিয়েছে, রোজা রাখতে পারছি না সেজন্যে খারাপ লাগছে। আমার যেদিন যেদিন পরীক্ষা থাকে সেদিন রোজা রাখছি না। তবে অন্যদিনগুলোতে রোজা রাখছি।
ব্রিটেনের অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুল অ্যান্ড কলেজ টিচার্সের মুখপাত্র আনা কোল বলেন, রোজার মত শিক্ষা অর্জনও মুসলিমদের জন্য ধর্মীয় এবং নৈতিক কর্তব্য।
যদি রোজা রাখতে গিয়ে পরীক্ষার ফলের ওপর প্রভাব পড়ে। যদি তা স্মরণশক্তি এবং মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায় তাহলে তাদের রোজা না রাখলেও চলবে। আমরা তাদের এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছি।
তবে অনেক শিক্ষকের বক্তব্য, পরীক্ষার কারণে রোজা না রাখার বিষয়ে ইসলামে সবাই যে একমত হবেন তা নয়। কিন্তু প্রয়োজনে এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলে বা ইমামের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে পারে।
টিটিএন/পিআর