তুরস্কে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেফতার ১১০০

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে দেশটির হাজার হাজার জনতা। ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হয়েছে এই বিক্ষোভ। এদিকে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত- পাঁচদিন ধরে চলা এই বিক্ষোভ থেকে ১ হাজার ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত এক দশকের মধ্যে এত বড় বিক্ষোভ দেখেনি তুরস্কবাসী। বিক্ষোভ দমনে এরই মধ্যে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। একপর্যায়ে তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান ও পিপার স্প্রে ব্যবহার করেন। এ সময় বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয় তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সিটি হল এলাকা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ে তাকে মনোনীত করতে রোববার (২৩ মার্চ) ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ইমামোগলুকে গ্রেফতার দেখিয়েছে ক্ষমতাসীন এরদোয়ান সরকার। তার আগে বুধবার (১৯ মার্চ) বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
এদিকে, গ্রেফতার হলেও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু। তবে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে তা পারবেন না।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার আগে একরেম অভিযোগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় আমাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি মাথা নত করবো না।
এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বিক্ষোভকারীদের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে ও জনগণের মাঝে ঐক্য নষ্ট করতে সিএইচপির নেতারা এই কাজ করছেন ও করাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে ইস্তাম্বুলের সিটি হলে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকে। গত পাঁচদিন ধরে তারা সেখানে বিক্ষোভ করছে। তুরস্কের পতাকা উড়িয়ে তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
একরেমের স্ত্রী দিলেক কায়া ইমামোগলু সিটি হলের বাইরে জড়ো হওয়া হাজার হাজার জনতার উদ্দেশে বলেন, তার স্বামীর প্রতি করা অন্যায় প্রতিটি বিবেকবান মানুষের মনে নাড়া দিয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালে এরকম বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল তুরস্কে। তখন ইস্তাম্বুলের স্থানীয় একটি পার্ক ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। এর ১০ বছর পর একরামকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আবারও রাস্তায় নামল হাজার হাজার মানুষ।
বিজ্ঞাপন
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তুরস্কের ৮১ প্রদেশের মধ্যে অন্তত ৫৫টি প্রদেশে বিক্ষোভ হয়েছে, যা দেশটির দুই তৃতীয়াংশ অঞ্চলের সমান।
আটকের পর রোববার একরেমকে আদালতে তোলা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড, টেন্ডারবাজি ও অপরাধী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনেন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে একরেমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্র: বিবিসি
বিজ্ঞাপন
এসএএইচ
বিজ্ঞাপন