৪ কানাডীয় নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলো চীন

চলতি বছরের শুরুর দিকে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের দায়ে কানাডার চার নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে চীন। তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ড ভোগ করা ব্যক্তিরা সবাই দ্বৈত নাগরিকত্বধারী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিবিসি জানিয়েছে, এই ঘটনায় কানাডায় অবস্থিত চীনের দূতাবাসের একজন মুখপাত্র অটোয়াকে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক আরও অবনতি হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
একই দিনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা আইন অনুসারে কাজ করেছে। অন্যদিকে, কানাডায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই চার ব্যক্তি যে অপরাধ করেছেন, তার দৃঢ় ও পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে।
চীনের সরকার বলেছে, তারা সংশ্লিষ্ট কানাডিয়ান নাগরিকদের অধিকার ও স্বার্থ পুরোপুরি নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি কানাডাকে চীনের বিচারিক সার্বভৌমত্বকে সম্মান করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
চীন দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকার করে না ও মাদক সংক্রান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। তবে এ ধরনের অপরাধে বিদেশিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা বিরল।
কানাডীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছেন, তিনি মাসের পর মাস এই মামলা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে মৃত্যুদণ্ড ঠেকানোর চেষ্টাও করেছেন।
বিজ্ঞাপন
কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শার্লট ম্যাকলিওড কানাডার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা বারবার এই ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমার আবেদন করেছি এবং বিশ্বের যেকোনো পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা অব্যাহত রাখব।’
মাদক পাচার, দুর্নীতি এবং গুপ্তচরবৃত্তির মতো গুরুতর অপরাধে চীনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা একটি সাধারণ ব্যাপার বলে মনে করা হয়। তবে দেশটির মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা গোপন রাখা হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, চীন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে থাকে।
২০১৯ সালে মাদক পাচারের অভিযোগে চীনে কানাডীয় নাগরিক রবার্ট লয়েড শেলেনবার্গের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন আদালত। তবে তাঁকে এবারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে চীনা টেলিকম নির্বাহী মেং ওয়াংঝোকে গ্রেফতার করেছিল কানাডা। তারপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। এর জবাবে চীন দুই কানাডীয় নাগরিককে গ্রেফতার করেছিল, যদিও তারা এখন মুক্তি পেয়েছেন।
২০২৩ সালে কানাডার সংবাদমাধ্যম ফাস হওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানায়, চীন কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। চীন এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মানহানিকর বলে প্রত্যাখ্যান করে।
সম্প্রতি চীনা বৈদ্যুতিক যানবাহন, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করে কানাডা। আর প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কানাডার কিছু কৃষিপণ্য ও খাদ্য আমদানির ওপর শুল্ক বাড়িয়েছে বেইজিং।
বিজ্ঞাপন
সূত্র: বিবিসি
এসএএইচ
বিজ্ঞাপন