চমেকে তিন বছর ধরে নষ্ট এনজিওগ্রাম মেশিন
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে রোগীর চাপ বাড়ায় সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও স্বজনরা। রোগী বাড়ার কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। বিশেষ করে হৃদরোগ বিভাগের দুটি এনজিওগ্রাম মেশিনের একটি তিন বছরের বেশি সময় ধরে নষ্ট থাকায় জরুরি সেবা পাচ্ছেন না অনেক রোগী।
এমন পরিস্থিতিতে বিত্তবানরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসা নিলেও বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র রোগীরা। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও অনেক রোগী এনজিওগ্রাম কিংবা রিং লাগাতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯৮ সালে চমেক হাসপাতালে মাত্র ৬টি শয্যা নিয়ে চালু হয় হৃদরোগ বিভাগ। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে সেটি ১৬০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে বর্তমানে অধিকাংশ সময় শয্যা সংখ্যার দ্বিগুণের কাছাকাছি রোগী ভর্তি থাকে। ফলে সেবার মান নিয়ে হরহামেশাই অভিযোগ তুলছেন রোগীরা।
চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে হাটহাজারী থেকে আসা রোগীর স্বজন আমিনুল ইসলাম বলেন, গত সোমবার আমার বাবাকে হৃদরোগ বিভাগে ভর্তি করি। বুকের ব্যথা কমলে ডাক্তাররা এনজিওগ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সিরিয়াল পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। শুনেছি, এখানে অনেক রোগী লম্বা সিরিয়ালে আছেন। আমরা গরিব, বেসরকারি হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করার ক্ষমতা নেই।
আরও পড়ুন
- বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ফের কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু
- চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা উদ্বেগের
চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. ইকবাল মাহমুদ বলেন, ঠান্ডা শুরু হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিমাণ বাড়ানো, দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করা, শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানো এবং ধূমপান থেকে বিরত থেকে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমানো যায়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুর উদ্দিন তারেক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বাড়ছে। আমরা তো কোনো রোগীকে ফেরত দিতে পারি না। কিছু সীমাবদ্ধতার মধ্যেও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছি। বর্তমানে একটি এনজিওগ্রাম মেশিন দীর্ঘ সময় ধরে নষ্ট থাকায় অনেক রোগীর এনজিওগ্রাম, রিং লাগানো, পার্মানেন্ট পেসমেকার স্থাপনের কাজ সঠিক সময়ে করতে পারছি না। এতে রোগীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বাইরের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নতুন একটি এনজিওগ্রাম মেশিন আসার কথা রয়েছে। এছাড়া নষ্ট মেশিনটি মেরামতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই দুটি মেশিন চালু হলে কাজের গতি কয়েক গুণ বাড়বে।
এমডিআইএইচ/কেএসআর/এমএস