ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

অচল এমআরআই মেশিন সচল করতে সাড়ে ৩ বছর পার

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ১২:১৩ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে আছে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে।

তবে অচল মেশিনটি সচল করতে উদ্যোগী হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেশিনটি মেরামতে প্রয়োজন পড়েছে আরও সাড়ে তিন কোটি টাকা। আর এই অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তির (সিএমসি) জন্য ন্যাশনাল ইলেকট্রোমেডিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিইউ অ্যান্ড টিসি) মেশিনটির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেডিটেল প্রাইভেট লিমিটেডকে আরও প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিতে হবে। এই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে আগামী জানুয়ারির শেষের দিকে মেশিনটির কার্যক্রম শুরু হতে পারে। মেশিনটি সচল হলে গরিব রোগীরা স্বল্পমূল্যে এমআরআই করাতে পারবেন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে চমেক হাসপাতালে এমআরআই মেশিনটি বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাপানি হিটাচি ব্র্যান্ডের (১.৫ টেসলা) মেশিনটির মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। ঢাকার মেডিটেল প্রাইভেট লিমিটেড মেশিনটি সরবরাহ করে। হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের নিচতলায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর মেশিন স্থাপন শেষে উদ্বোধন করা হয়। মেশিনটির সেবা কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে। তবে মেশিনটি ৩ বছরের ওয়ারেন্টির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ২০২০ সালের অক্টোবরে অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে এমআরআই সেবা বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালের মে মাসে মেরামত করে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তবে মাস না যেতেই ফের অকেজো হয়ে পড়ে এই মেশিন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে মেশিনটি।

চিকিৎসকরা বলছেন, মস্তিস্কের বিভিন্ন স্নায়ু, টিউমার, স্ট্রোকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য এমআরআইয়ের প্রয়োজন পড়ে। হাসপাতালে এমআরআই মেশিন সচল থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে রোগ নির্ণয় করে রোগীদের দ্রুত সেবা দেওয়া সম্ভব হতো। তবে এখন আমাদের রোগীরা সেই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি দীর্ঘ সময় ধরে নষ্ট পড়ে থাকায় দরিদ্র রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেক রোগী উপায় না দেখে ধার দেনা করে বেসরকারি বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এমআরআই পরীক্ষা করছেন। চমেক হাসপাতালে এমআরআই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ক্ষেত্র বিশেষে তিন হাজার ও চার হাজার টাকা ফি দিতে হয়। বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ পড়ে।

চমেক হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় ৪ কোটি মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতাল। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি নষ্ট থাকার কারণে গরিব রোগীরা কম খরচের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখন মেশিনটি পুনরায় সচল হলে গরিব রোগীরা সেবা পাবেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, এমআরআই মেশিনটি সাড়ে ৩ বছর ধরে নষ্ট পড়ে আছে। এটি মেরামতে মন্ত্রণালয়ে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে মেশিনটি পুনরায় সচল করা সম্ভব হবে। আশা করছি আগামী জানুয়ারিতে মেশিনটি চালু করা সম্ভব হবে।

এমডিআইএইচ/এসআইটি/জেআইএম