ডেঙ্গু সংক্রমণের মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে ডেঙ্গু সংক্রমণ এখন আর শীত-গ্রীষ্ম মানছে না, ফলে সবসময়ই ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছর ধরে সারা বছরই কম-বেশি ডেঙ্গুরোগী পাওয়া যাচ্ছে। একইসঙ্গে মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ না থাকার ফলে দেশে বছরব্যাপী ডেঙ্গু সংক্রমণ চলছে।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান সংগঠনটির সভাপতি এম এ মুবিন খান।
তিনি বলেন, এবারও ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে বছরজুড়ে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা। জেলা শহরগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি না হলেও ঢাকা-চট্টগ্রমের অবস্থা ভয়াবহ। এবার ‘অ্যাক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোমে’ মৃত্যুহার বাড়ছে। সাধারণত দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বর্ষার আগে শুরু হয়। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কে ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত মশা শীত-গ্রীষ্ম মানছে না, বছরব্যাপী প্রজনন এবং বংশবিস্তার করছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে এম এ মুবিন খান বলেন, দেশে চলতি বছরের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৭৯৪ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৮৫ জন। এই অবস্থায় ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য ও প্রতিরোধ করতে কী কী করণীয়, সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। একইসঙ্গে বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাহক মশা নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিপিএমসিএ সভাপতি বলেন, পৃথিবীতে যেসব শহর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে, দেখা যায় তারা সারাবছর ধরে নিবিড় নজরদারি চালায়, যেন কোথাও পানি জমে না থাকে। বিশেষ করে পাশের কলকাতা শহর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতা করপোরেশন সারা বছর ধরেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে।
‘তাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মী আছেন, যাদের মধ্যে একদল প্রচারের কাজ চালায়, আর অন্য দল পানি জমে কি-না কোথাও সেটার ওপরে নজর রাখে। এছাড়াও শহরের প্রতিটা হাসপাতাল বা পরীক্ষাগারে রোগীদের কী কী রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে বা ভাইরাস পাওয়া যাচ্ছে, তার প্রতিদিনের হিসাব রাখা হয়। ডেঙ্গু রোগীর খোঁজ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন সবসময় সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। প্রতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ যখন বেড়ে যায়, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করতে সচেষ্ট থাকেন।
এএএম/এমআরএম/এএসএম