ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তিসহ তিন দাবিতে সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৫৬ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তিসহ তিন দফা দাবিতে সমাবেশ করেছে চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ (ইউমব)।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।

ইউমব’র সদস্য ডা. এসএম মামুনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির আহ্বায়ক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, ইউমবের মুখপাত্র ডা. মোবারক হোসাইন, বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক ফোরাম নেতা ডা. সামিউর রশিদ রিফাতসহ মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা।

বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য অব্যবস্থাপনার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, যে কেউ চাইলেই তার নামের সামনে ডাক্তার শব্দটি জুড়ে দিতে পারেন, পড়তে পারেন চিকিৎসকদের সাদা অ্যাপ্রোন, ন্যূনতম অ্যানাটমির জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও হরহামেশা করতে পারেন আলট্রাসনোগ্রাম। যত্রতত্র ওষুধের ব্যবহার আজ এত ব্যাপক আকার ধারণ করেছে যে, সাধারণ রোগ জীবাণুও আজ অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হয়ে পড়েছে। মধ্য শিক্ষিত, অশিক্ষিত (অক্ষর জ্গানহীন) এমনকি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে, যা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ক্রমাগত হুমকির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন ফার্মেসি বা ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ কারণে অনেক রোগীর অঙ্গহানি ও মৃত্যু হচ্ছে। মূলত তিন-ছয় মাসের কোর্স ডিপ্লোমাধারীরাই এসব কাজ বেশি করেন। আবার অনেকে না জেনেই নামধারী ‘হাতুড়ে’ ডাক্তারের কাছে যান। একপর্যায়ে সব হারিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন। তখন আর কিছুই করার থাকে না। তাই অপচিকিৎসা না নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে রোগীদের আসা উচিত। তাহলেই ভুয়া ডাক্তারদের দৌরাত্ম্য কমবে।

তারা আরও বলেন, দু-একটি ওষুধের নাম জানা থাকলেই এখন নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেন অনেকে। অথচ তাদের কোনো ডিগ্রি বা পড়াশোনা নেই। আর এমন ভুয়া ডাক্তারদের কারণে প্রতিনিয়ত রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়েন। ভুল চিকিৎসার ফলে কেউ কেউ মারাও যান। তাই ডাক্তার পদবি ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট আইন চাই। এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবেন না।

বক্তারা আরও বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২০১০ সালে প্রণীত বিএমডিসি আইনের আজ অবধি কোনো বাস্তব প্রয়োগ আমরা পাইনি। আইন প্রণীত হওয়ার ১৫ বছর পর তাই এই আইনের যথাযথ ও বাস্তবভিত্তিক প্রয়োগ চাওয়া আজ তাই দাবি নয় বরং ন্যায্য অধিকার। এই ন্যায্য অধিকারে হিস্যা আমরা তো পাইনি। বরং ২০১৩ সালে কয়েকজন স্যাকমো আদালতে একটি রিট (২৭৩০/২০১৩) দায়ের করেন এবং এই রিটের রেফারেন্সে অচিকিৎসকরা তাদের নামের সামনে ডাক্তার লিখে যাচ্ছেন। ২০১৩ সালে করা সেই রিট পিটিশন নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে গত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৬৬ বার কজ লিস্টে এলেও মূল শুনানির জন্য কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। ২৭ অক্টোবর রিটের ৬৭তম শুনানি হতে যাচ্ছে। এত জনগুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আজকের এই নতুন বাংলাদেশেও যদি সমাধান না হয়, তা দেশের সচেতন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং জনতা কখনোই মেনে নেবে না।

তিন দফা দাবি

• ডাক্তার পদবি ব্যবহার সংক্রান্ত আইনবিরোধী এবং অযৌক্তিক ২৯৩০/২০১৩ রিটটি অনতিবিলম্বে নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালে প্রণীত বিএমডিসি আইন-২০১০ এর সুষ্ঠু ও বাস্তবসম্মত প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

• ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ব্যতিত অন্য কেউ যেন ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে না পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।

• চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবর স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন-২০২৪ প্রণয়নকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশের ওপর যে পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে, তা বিবেচনায় রেখে আগামী এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য ন্যায়সঙ্গত স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।

এএএম/ইএ/জেআইএম