ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আহতদের চিকিৎসায় বিদেশি চিকিৎসক আনার প্রক্রিয়া চলমান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১০ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম আনার প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

তিনি বলেন, যারা আহত হয়েছেন বিশেষত যারা চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, পায়ে আঘাত পেয়েছেন, অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে ডাক্তারদের মেডিকেল টিম এনে (চীন, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশ হতে) চিকিৎসার প্রক্রিয়া চলমান।

সোমবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, এরই মধ্যে চীনের অ্যাডভান্স মেডিকেল টিম বাংলাদেশে এসেছেন। তারা হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করে চিকিৎসায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া নিড বেজড অ্যাসেসমেন্ট পরবর্তীতে কী ধরনের সেবা/সাপোর্ট দেওয়া হবে সে বিষয়েও তারা অবহিত করবেন। বিভিন্ন দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত চক্ষু রোগীদের সুচিকিৎসার জন্য সেবা ফাউন্ডেশন ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উদ্যোগে নেপাল থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এসেছেন। এছাড়া আজ ফ্রান্সের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও আসছেন।

নুরজাহান বেগম বলেন, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন ১৫ দিনের মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে অর্থোপেডিক ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশে আসবেন। নেপাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মোট ১৯২ জন চক্ষু রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন এবং চারজন জটিল রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করেন।

আরও পড়ুন

তিনি আরও বলেন, ইনজুরড রেটিনা রোগীদের রেটিনার অস্ত্রোপচার শেষ হলে প্রায় ছয় মাস পর কর্নিয়ার অপারেশনের প্রয়োজন পড়তে পারে। কর্নিয়া সরবরাহে সেবা ফাউন্ডেশন সহায়তার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এছাড়া বিদেশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেছেন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন তা ছিল সঠিক। এই ধরনের রোগীদের নেপালেও একইভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। চোখের ভেতরের গুলি যে পদ্ধতিতে অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সঠিক।

এই উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও শহীদ পরিবারকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে নীতিমালা প্রণয়ন এবং শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি এরই মধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা এবং আহত-নিহতদের একটা প্রাথমিক তালিকা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছে।

তিনি বলেন, এই তালিকা সর্বসাধারণের যাচাইয়ের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ে ডাটাবেজ তৈরির সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সারাদেশে এখন পর্যন্ত ৭৩৭ জন নিহত এবং ২২ হাজার ৯০৭ জন আহত হয়েছেন।

ডেঙ্গু বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশের সব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসমূহে ডেঙ্গু কর্নার স্থাপন, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করা, ল্যাবরেটরিতে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় ও অন্যান্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ডিএনসিসি ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ডেঙ্গুর দুটি দিক আছে। একটি হচ্ছে প্রতিরোধ, আরেকটি চিকিৎসা। আমরা যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সচেতন করতে পারি তাহলে ডেঙ্গুর প্রতিকার করা সম্ভব।

এছাড়া দেশের সব সরকারি হাসপাতালে (জেলা পর্যায় পর্যন্ত) ডেঙ্গু বিষয়ে ‘ফোকাল পারসন’ নির্ধারণ করা হয়েছে, যাদের মাধ্যমে নিয়মিত সারাদেশের ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় টেস্ট কিট, আইভি ফ্লুইড (স্যালাইন) এবং অন্যান্য লজিস্টিকের স্টক ও চাহিদা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ. টি. এম. সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এমএএস/ইএ/এমএস