ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

এসডোর গবেষণা

শিশুদের খেলনা ও পণ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক, মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:১৯ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

শিশুদের ব্যবহৃত ব্যাগ, খেলনা পুতুল, ও প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে বিপজ্জনক সীসা ও রাসায়নিক। যা শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের ব্যবহৃত স্টেশনারি ব্যাগে পাওয়া গেছে ৫৮০ পিপিএম সীসা, ১২৮০ পিপিএম ব্যারিয়াম, ৮৮ পিপিএম পারদ। যা একটি স্কুলের ব্যাগই শিশুর জন্য বিপজ্জনক।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ঢাকায় এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (এসডো) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এসডো ও ব্যান টক্সিকস, ফিলিপাইন যৌথভাবে এই তথ্য প্রকাশ করে।

১৬০টি নমুনার ওপর এক্সআরএফ গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের খেলনা ও পণ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। যা তৈরি হয়েছে রিসাইকেল করা প্লাস্টিক থেকে। নমুনার প্রতিটিতেই পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া গেছে।

শিশুদের ব্যবহৃত ব্যাগ, খেলনা পুতুল, ও প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে বিপজ্জনক সীসা ও রাসায়নিক

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, পুতুল সেটে ১৬০ পিপিএম সীসা ও ১৫০০ পিপিএম ক্রোমিয়াম। শিশুদের ব্যবহৃত সাধারণ পানির কাপে ১৩৮০ পিপিএম সীসা, ২৪৭ পিপিএম আর্সেনিক ও ১৩৯০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। শিশুদের পানি খাওয়ার মগে পাওয়া গেছে ২২০ পিপিএম সীসা, ৩১৫ পিপিএম ক্যাডমিয়াম এবং ১,৬৮০ পিপিএম ক্রোমিয়াম। প্রতিদিন পানি পানের সময় শিশুরা এই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের সুপরিচিত খেলনা দোকান থেকে কেনা পুতুল সেটে প্রায় ৫০০ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে। যা প্রমাণ করে যে বড় দোকানগুলোও এই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থমুক্ত নয়। এবং শিশুদের শেখার জন্য তৈরি বর্ণমালা সেটের একটি অক্ষরে ৬৬০ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে।

শিশুদের ব্যবহৃত ব্যাগ, খেলনা পুতুল, ও প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে বিপজ্জনক সীসা ও রাসায়নিক

শিশুদের পণ্যে এসব রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি বিপজ্জনক উল্লেখ করে এসডো-এর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের বিষয়ে জোর দিতে হবে। এত অল্প বয়সে ক্ষতিকর রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে। এটি এমন একটি সংকট যা অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি রাখে।

এ বিষয়ে এসডোর চেয়ারপারসন এবং বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, শিশুদের পণ্যে এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি একটি জরুরি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই অদৃশ্য হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য।

শিশুদের ব্যবহৃত ব্যাগ, খেলনা পুতুল, ও প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে বিপজ্জনক সীসা ও রাসায়নিক

এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, খেলনায় রিসাইকেল করা প্লাস্টিক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রণয়ন করা উচিৎ।

তিনি আরও বলেন, শিশুদের খেলনায় রিসাইকেল করা প্লাস্টিকের ব্যবহার বিপজ্জনক। কারণ এতে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে। যা শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। এমন উপাদান খেলনায় কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়। আমরা চাই খেলনায় রিসাইকেল করা প্লাস্টিক নিষিদ্ধ হোক এবং সব শিশুদের পণ্য ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত থাকুক। আমাদের শিশুদের সুরক্ষাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

গবেষণার ফল প্রকাশের অনুষ্ঠানে এসডো এবং ব্যান টক্সিকস এই বিপজ্জনক পণ্যগুলো অবিলম্বে দোকান থেকে সরিয়ে ফেলা এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ রোধে নিরাপত্তা মানদণ্ড আরও কঠোর করা হয় এই আহ্বান জানায়।

এএএম/এমআইএইচএস/জেআইএম