ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

নার্স আন্দোলনের গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত: ১০:৩৭ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৬

বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ও বেসিক গ্রাজুয়েট বেকার নার্সদের চলমান আন্দোলন বন্ধ করতে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এর পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রেখে কিভাবে বেকার নার্সদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগের সুযোগ করে দেয়া যায় সে উপায় খুঁজে বের করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সেবা পরিদফতরের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ নীতি-নির্ধারকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সেবা পরিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা শনিবার জাগো নিউজকে জানান, রাজধানীসহ সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে নার্সের প্রকট সংকট বিরাজ করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুসারে ১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে ৩ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে আদর্শ সংখ্যার ধারে কাছেও নেই। ফলে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে মারাত্মক নার্স সংকট বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সারাদেশে ২১ হাজারেরও বেশি বেকার নার্স থাকলেও সরকারিভাবে নিয়োগে শ্লথগতিতে সার্বিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এ সেক্টরে কর্মরত সিনিয়র নার্সরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ হাজার নতুন নার্স নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দিলেও সরকারি হাসপাতালে নার্স সংকট দূর হবে না।

সম্প্রতি পিএসসির মাধ্যমে সরকার সাড়ে তিন সহস্রাধিক নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবিতে গত ৪ এপ্রিল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে আগের নিয়মে ব্যাচ, মেধা ও সিনিয়রটির ভিত্তিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ও গ্রাজুয়েট বেকার নার্সরা। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পদ্ধতিতে নিয়োগের কথা বলা হয়।

বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন সভানেত্রী রিনা আক্তার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, দীর্ঘ চারটি বছর হোস্টেলে থেকে পড়াশুনায় যে কি কষ্ট। থাকার কষ্ট, খাওয়ার কষ্ট, লেখাপড়ার কষ্ট, পরীক্ষা দিয়েছি, পাসও করেছি। তারপরও গত ১০ বছর সরকারি চাকরির আশায় থেকেছি।

তিনি বলেন, গত বছর পর্যন্ত ব্যাচ, মেধা ও সিনিয়রটির ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ায় আমাদের অনেকেরই চাকরি হয়নি, অনেক আবেদনই করতে পারেনি। এখন নতুন নিয়ম হলে চাকরি হবে কিনা তা সন্দেহ। তিনি মানবিক দিক বিবেচনায় আগের নিয়মে নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সকলের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

তিনি জানান, শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম যোগদান করতে এলে তিনিসহ নার্সরা তার সঙ্গে দেখা করে তাদের ন্যায্য দাবির ব্যাপারে কথা শুনবেন বলে আশ্বাস দেন। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পিএসের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে দুই একদিনের মধ্যে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে নেবেন।

বেকার নার্সরা সম্প্রতি শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়ে কাঁদানে গ্যাস, গরম রঙিন পানি নিক্ষেপ ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বেশ কজন নার্সকে চিকিৎসা নিতে হয়।

এ কারণে সরকারি হাসপাতালের নার্সদের একটা বড় অংশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ওপর নাখোশ। চলমান আন্দোলনে প্রকাশ্যে সহায়তা না করলেও মানসিকভাবে বেকার নার্সদের সঙ্গে তারা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ওই নার্সরা হাসপাতালেও মনোযোগী হয়ে কাজ করছেন না, ফলে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বেকার নার্সদের তিন সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের খবর প্রধানমন্ত্রীর কানেও পৌঁছেছে। তিনি বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

সেবা অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, সীমিত সংখ্যক নার্স নিয়েও দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের কাজ চলছে। তিনি বলেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেকার নার্সদের দাবি মেনে নিয়ে আন্দোলনকারী নার্সদের নিয়োগ দিলে স্বাস্থ্যসেবার মান আরো উন্নত হবে।

এমইউ/এসএইচএস/এবিএস

আরও পড়ুন