স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কমিউনিটি ক্লিনিক এখন প্রান্তিক মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক এখন আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা এখন প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার (২৯ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন এসব কথা বলেন।
‘স্বাস্থ্য সবার জন্য, সবাই স্বাস্থ্যের জন্য’ এ প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলির দ্বিতীয় দিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্যানেলে এ বক্তব্য উপস্থাপন করেন সামন্ত লাল।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার মান ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনে কৌশলগত বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ইপিআই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ১০টি রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেওয়া, গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী মাতৃস্বাস্থ্য সেবা বাড়ানোর ফলে গত ২০ বছরে মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে দক্ষিণ-এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কারণে গড় আয়ু ১৯৭১ সালে ৫০ থেকে বেড়ে বর্তমানে তা ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে এসব অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সূচক অর্জনে বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সম্মেলনে দেশের স্বাস্থ্যখাতের তথ্য উপস্থাপন করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল একই দিনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দ্বি-পাক্ষিক ও সাইড মিটিংয়ে অংশ নেন। এশিয়া পেসিফিক অঞ্চলের দেশ সমূহে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্সের বিরুদ্ধে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে জাপান সরকারের আমন্ত্রণে একটি ব্রেকফাস্ট মিটিংয়ে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্সের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের সদিচ্ছা, দৃঢ় অবস্থান, কার্যকরী পদক্ষেপসহ আন্তর্জাতিকভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরেন।
দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অগ্রগতির চিত্রসহ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরেন। আঞ্চলিক পরিচালক আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের সাধারণ সভায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্সের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
এছাড়া তিনি ৭-১০ অক্টোবর, দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির ৭৭তম সভা বাংলাদেশে আয়োজনে সম্মত হওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে তা সফল করতে সব উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন।
সাসাকাওয়া ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আরেকটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে লেপরোসী নির্মূলে ফাউন্ডেশনের সহযোগিতার জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে খাদ্যে লবণের পরিমাণ কমানো বিষয়ক একটি সাইড ইভেন্টে অংশ নিয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ কমানোর জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি লবণের বিকল্প তৈরির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বৈঠক সমূহে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, যুগ্মসচিব, পরিচালক, মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধিসহ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও মিশনের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এএএম/এমআইএইচএস/এএসএম