ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

দেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ১৬ মে ২০২৪

বাংলাদেশে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ। এর ফলে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কেবল উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই অসংক্রামক রোগজনিত অকালমৃত্যু অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর বিএমএ ভবনে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

এই আয়োজনে সহযোগিতা করে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এবছর বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’।

আলোচনা সভায় জানান হয়, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, কিডনি রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান ঝুঁকি উচ্চ রক্তচাপ। ডব্লিউএইচও’র গ্লোবাল রিপোর্ট অন হাইপারটেনশনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে দুই লাখ ৭৩ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেন। যার ৫৪ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপ। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭০ শতাংশের জন্য অসংক্রামক রোগ দায়ী হলেও এসব রোগ মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ খুবই সামান্য। মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ।

আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা প্রশংসনীয়। তবে ওষুধ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এখাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. এনামুল হক বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ রক্তচাপ পরীক্ষা ও ওষুধে এক টাকা বিনিয়োগ করলে সামগ্রিকভাবে ১৮ টাকার সুফল পাওয়া যায়। এখাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষভাবে তা ব্যবহার করা সম্ভব হলে উচ্চ রক্তচাপজনিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো উপজেলায় হেলথ কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিতে কাজ করছি। এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা আশা করছি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সব কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

সাংবাদিক সুকান্ত গুপ্ত অলকের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক ড. লায়লা আখতার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির অধ্যাপক ও বাংলাদেশ কার্ডিওভাস্কুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. এস এম মোস্তফা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ প্রমুখ।

এএএম/জেডএইচ/জেআইএম