ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আলাদা হলো মেরুদণ্ডে জোড়া লাগা নুহা-নাভা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

পনের ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে আলাদা হয়েছে কুড়িগ্রামের মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। অস্ত্রোপচার পরবর্তী অবস্থায় নুহা ও নাভা ভালো আছেন।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী ডা. সামান্ত লাল সেন তাদের দেখতে আসেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু নুহা ও নাভার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। শিশু নুহা ও নাভার চিকিৎসার সব খরচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে বহন করছেন। তিনি নুহা ও নাভার সার্বক্ষণিক খবর নিচ্ছেন। তিনি শিশুদ্বয়ের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। চিকিৎসার শেষ ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছেন। নুহা ও নাভা ভালো আছে। এখন নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো কন্যা সন্তান নুহা ও নাভা গত ২০২২ সালের ২১ মার্চ জন্ম নেয়। জন্মের অল্প কয়েকদিন পর এপ্রিল মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে নুহা ও নাভাকে ভর্তি করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ সার্বিক তত্ত্বাবধান করে আসছেন।

২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপের সফল অস্ত্রপচার করা হয়। চলতি বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টার জটিল কঠিন অস্ত্রপচারে সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০০ জন মেডিকেল সদস্যের টিম অংশগ্রহণ করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের অপারেশন থিয়েটারে গত বছর ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলা নুহা ও নাভার প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন এ অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন। এ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নুহা ও নাভার দেহে টিস্যু বর্ধনকারী ডিভাইস চারটি এক্সপান্ডা সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়।

অস্ত্রোপচারের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম জাহিদ হোসেন, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বনিকসহ আরও ১০ জন চিকিৎসক এ অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন।

অস্ত্রোপচার পরবর্তী অবস্থায় সাবধানতার জন্য নুহা ও নাভাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই কেয়ার ইউনিট এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। এই অস্ত্রোপচারের দিনেও শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটের তত্ত্বাধায়ক ডা. সামন্ত লাল সেন উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এই জোড়া লাগানো জমজ শিশু দুজনের চিকিৎসার জন্য ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছেন। অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে শিশু সার্জারি, প্লাস্টিক ও রিকন্সট্রাকটিভ সার্জারি, ভাসকুলার সার্জারি, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, অ্যানেসথেসিয়াসহ সকল বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে এ বোর্ড গঠন করা হয়।

এএএম/এমআরএম/জেআইএম