ভিডিও EN
  1. Home/
  2. স্বাস্থ্য

বিশ্ব ক্যানসার দিবস কাল

সরকারি রেডিওথেরাপির বেশিরভাগই অকেজো

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৪৯ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ক্যানসার সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। তামাকের ধোঁয়ায় প্রায় ৭ হাজার রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে, যার মধ্যে ৭০টি ক্যানসার সৃষ্টিকারী। এগুলো ফুসফুস, শ্বাসতন্ত্র এবং মুখের ক্যানসারসহ অন্তত ১২ ধরনের ক্যানসার সৃষ্টি করে। পরোক্ষ ধূমপানেও ক্যানসার হতে পারে। কেবল শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমেই তামাক ব্যবহারজনিত ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বিশ্ব ক্যানসার দিবসের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে-ক্লোজ দ্য কেয়ার গ্যাপ অর্থাৎ ক্যানসার চিকিৎসায় বৈষম্য বন্ধ করুন।

দ্য ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (আইএআরসি)-এর হিসেব অনুযায়ী-কেবল ২০২২ সালেই বিশ্বে ২ কোটি নতুন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং ৯৭ লাখ মানুষ মারা গেছে। যার মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধূমপানকে ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটির মতে, তামাক ব্যবহার পরিহারসহ অন্যান্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ক্যানসারে মৃত্যু ঝুঁকি ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আইএআরসি এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২২ সালে ক্যানসারে মৃত্যু সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৮। তামাক ব্যবহারের উচ্চ প্রবণতা এ মৃত্যু পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে, ২০১৭ অনুযায়ী বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ (৩৫.৩%) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লাখ মানুষ। গণপরিবহনে যাতায়াতের সময় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় আড়াই কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে দেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়।

বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক বলেন, পরিস্থিতি বুঝে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হলে সব আগে হাসপাতাল ও জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার রোগী নিবন্ধন জরুরি, যা এখন পর্যন্ত দেশে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি ও গবেষণা ইনস্টিটিউট পাইলট প্রজেক্ট নিয়ে চেষ্টা করছে। এটিও সন্তোষজনক নয়।

তিনি বলেন, দেশে ব্লাড ক্যানসারের বাইরে অন্য ক্যানসারের অস্ত্রোপচারের জন্য সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট আছে। জেলা পর্যায়ে চিকিৎসক রয়েছেন। ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৯০ ভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে ওষুধ উৎপাদন ও কিছু ওষুধ বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। তবে ক্যানসারের রেডিওথেরাপি চিকিৎসার জন্য ৩০০টি মেশিন দরকার হলেও এ মুহূর্তে দেশে সরকারিভাবে ২২টি এবং বেসরকারিভাবে ১৮টি রেডিওথেরাপি মেশিন আছে। সরকারি মেশিনগুলোর এক দুই-তৃতীয়ংশই বেশিরভাগ সময় অকেজো থাকে। এতে রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। এছাড়া মেশিনগুলো পরিচালনার জন্য চিকিৎসকদের পদোন্নতি হচ্ছে না। সব সেন্টারে পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ ও পদোন্নতি দিতে হবে। পাশপাশি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসা ব্যয় বৈষম্য দূর করতে হবে।

বিশ্ব ক্যানসার দিবসের প্রতিক্রিয়ায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে। এটি যত বিলম্বিত হবে ক্যানসারসহ তামাক ব্যবহারজনিত বিভিন্ন রোগে মৃত্যু ততই বাড়তে থাকবে।

এএএম/এমআইএইচএস/জেআইএম